দেশে বৈচিত্র্যময় এক উপজেলা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। স্বচ্ছ নীল জলরাশির হাওর, পাহাড়-টিলা বেষ্টিত চা-বাগান, লেবু- আনারস বাগান, রাবার চাষ, উঁচু-নিচু টিলা আর সমতল ভূমিতে দেশের সর্বাধিক চা-বাগান সমৃদ্ধ পর্যটন উপজেলা শ্রীমঙ্গল। উপজেলা প্রশাসনের মতে, আছে ৪০ টিরও বেশি নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠির বাস। নৃ-গোষ্ঠির বিচিত্র জীবনাচার ও সংস্কৃতি এ উপজেলাকে করেছে বৈচিত্র্যময়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের বিদ্যাবিল কিংবা হরিণছড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার অত্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকা। এখানে গারো নৃ-গোষ্ঠীর বাস। স্বল্প আয়ের ধর্মপ্রাণ এই মানুষগুলো প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবে চমৎকারভাবে আয়োজন করে থাকে।
উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের জাম্বুরাছড়া কিংবা জুলেখা পুঞ্জি তো ভারত সীমান্তঘেঁষা। এখানে ত্রিপুরা আর খাসিয়া নৃ-গোষ্ঠীর বাস। এমনি প্রায় ৪০টি নৃ-গোষ্ঠী শ্রীমঙ্গলে বসবাস করছে। এরা কেউ পান চাষ করেন, কেউ লেবু কিংবা চা বাগানে কাজ করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন নির্বাহী অফিসার হিসেবে কাজ করার সুবাদে কিছুটা কাছে আসার সুযোগ হয় এই পরিবার গুলোর৷ তিনি জানতে পারেন এই সকল পরিবারের মায়েদের স্বপ্নের কথা। আর সকল মায়ের মতোই এই মায়েদের স্বপ্ন- তাদের সন্তানেরা ভালো মানুষ হবে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ, ব্যবসায়ী কিংবা ডিসি হবে। তারা তাদের সন্তানদের জন্য আরো পরিশ্রম করতে চায়, চায় কাজের সুযোগ, হতে চায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী।
এই সকল মায়ের স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আয় বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ বিনা খরচে বিদ্যাবিল ও হরিণছড়ায় নকশিকাঁথা তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে তাদের বিনামূল্যে সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে। সমিতির মাধ্যমে তাদের তৈরিকৃত এইসব পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ করে দিবে উপজেলা প্রশাসন। এই নকশিকাঁথায় তাদের গল্পগুলোই ফুটে উঠবে। উপজেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টা আর প্রান্তিক এই মানুষগুলোর পরিশ্রম এক হয়ে নিশ্চয়ই একদিন সকল মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে। তাই চেষ্টাটা শুরু করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন।