দেশের চতূর্দেশীয় বাংলাদেশ স্থলবন্দরে গত ২৫ আগস্ট দুপুর থেকে পাথর আমদানি পুনরায় শুরু করায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। তবে ভূটান থেকে এখনো পাথর আমদানি বন্ধ আছে। এবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেড এর ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন।
জানা যায় গত ৩১ জুলাই শুল্ক বিভাগ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালূ (শুল্ক) ১২ ডলার থেকে ১৩ ডলার করার কথা জানায় এবং ভূটানের পাথরে (ভাঙ্গা পাথর) প্রতি মেট্রিকটনে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (শূল্ক) ২১ ডালার থেকে বাড়িয়ে ২৪ ডলার করা হয়। এই রেটে পাথর আমদানি করলে ব্যবসায়ীদের লোকসান হবে ভেবে ১ আগষ্ট/২৩ থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রাখে। এতে করে ভারত থেকে টানা প্রায় ২৩ দিন এবং ভূটান থেকে প্রায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পাথর আসা বন্ধ থাকায় বন্দরের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। চতূর্দেশীয় স্থলবন্দরটিতে প্রায় ৯৫% শতাংশ পাথর আমদানি নির্ভর করে ভারত ও ভূটানের উপর। ফলে এ বন্দরে ভারত ও ভূটান থেকে ৩৫০-৪৫০টি ট্রাকে পাথর আমদানি হতো। দীর্ঘদিন পাথর আমদানি না হওয়ায় বন্দরের ইয়ার্ডে পাথর শূণ্য হয়ে পড়ে এবং শ্রমিকরা বেকার হয়ে বসে। সেই সংগে বন্দরের পাথর ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হন।
এরআগে ভারতের ফুলবাড়ি স্থলবন্দর ট্রাক অনার্স সমিতি ভারতীয় ট্রাকগুলোতে এ হারে টাকা আদায় না করায় ফুলবাড়ি স্থলবন্দর ট্রাক অনার্স সমিতির সঙ্গে ব্যবসায়ীরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। ফলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে গত ১১ জুলাই থেকে ২২ জুলাই/২০২৩ পর্যন্ত আমদানী-রপ্তানি বন্ধ থাকে। এসময়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের কোন পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে ঢুকেনি। পরবর্তীতে ওই দ্বন্দ্ব মিমাংসার প্রায় ১৪ দিন পুর গত ২৩ জুলাই/২০২৩ সকাল থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ভারতের সংগে আমদানী-রপ্তানী শুরু হয়ে সপ্তাহখানেক চলার পর পুনরায় ১ আগস্ট/২০২৩ থেকে বন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ ছিল।
কাস্টমসূত্র জানায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থ বছরে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। ওই লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। অর্থ বছরের জু মাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় জুনে আদায় বেশি হয়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু কিছুদিন পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই খুদা মিলন জানান, শুল্ক বিভাগের অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালূ (শুল্ক) কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মেনেই পুনরায় ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি শুরু করেছে। তবে ভূটান থেকে এখনো পাথর আমদানি শুরু হয়নি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মাহবুদ এর নিকট এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালূ (শুল্ক) নির্ধারিত প্রতি টন ১৩ ডলার হিসেবে মেনে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ব্যবসায়ীরা পুনরায় পাথর আমদানি শুরু করেছে।