আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা-৬(পাইকগাছা-কয়রা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। ভোটের আগে মাঠের লড়াইয়ে দলীয় পর্যায়ে লবিংয়ের পাশাপাশি নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেছেন। আসনটিতে বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর পাশাপাশি সরকার দলীয় অন্তত ১০ জন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়মিত মাঠে গণসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, উৎসব ও দলীয় কর্মসূচীতে নিজেদের সক্রিয় সম্পৃক্ততা ও ব্যানার-পোষ্টারের মাধ্যমে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে অনেকে পৃথক কর্মসূচীতে নিজেদের পরিচিতি ও প্রত্যাশার বিষয়গুলিকে জানান দিলেও অনেকে বর্তমান সাংসদের সাথে একই মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। তবে কে হচ্ছেন সুন্দরবন উপকূলীয় জনগুরুত্বপূর্ণ আসনটি থেকে নৌকার প্রার্থী ? বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর উপর আস্থা রেখে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে ? নাকি দশম ও একাদশ নির্বাচনের পুণরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে আসনটিতে ? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। প্রয়াত শহীদ এমএনএ গফুর, অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক, প্রথম নির্বাচনের অ্যাড. স.ম বাবর আলী, নবম নির্বাচনের কাণ্ডারী অ্যাড. সোহরাব আলী সানা ও সর্বশেষ বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর উপর ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করছে আওয়ামীলীগ। তবে গত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনে ছিল শ্বাসরুদ্ধকর চমক। নবম নির্বাচনে দলীয় টিকিটে নির্বাচিত হয়েও দশম নির্বাচনে প্রার্থীতা ধরে রাখতে পারেননি বর্তমানে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. সোহরাব আলী সানা। পরের বার দশম নির্বাচনে সতীর্থ প্রয়াত অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক এর কাছে প্রার্থীতা হারান তিনি। একইভাবে নৌকায় চড়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হলেও একাদশ নির্বাচনে দল আর তার উপর ভরসা রাখতে পারেনি। একাদশ নির্বাচনে হেভিওয়েটদের ভীঁড়ে শেষ মূহুর্তে দলীয় টিকিট পান বর্তমান সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু। তবে এবারো কি তার পুণরাবৃত্তি ঘটবে আসনটিতে? নাকি আক্তারুজ্জামান বাবুতেই তৃপ্ত আওয়ামী লীগ ফের তার উপরই ভরসা রাখবেন ? যদিও তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে তফশীল পরবর্তী দলীয় প্রার্থী বাছাই পর্যন্ত। যদিও সর্বশেষ দলীয় নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ চাইছে প্রার্থী পরিবর্তন। আর তাদের চাওয়ার উপরানা বুঝে পেতে অন্তত ১০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী এই মূহুর্তে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বর্তমান সংসদ সদস্যের পাশাপাশি মাঠ মাতাচ্ছেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. সোহরাব আলী সানা, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক এর দু’ছেলে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মনিরুল হক ও জেলা আ.লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ রাশেদুজ্জামান রাসেল, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জি. জিএম মাহবুবুল আলম, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জি. প্রেম কুমার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. শেখ শহীদুল্লাহ, পাইকগাছা পৌর মেয়র সেলিমজাঙ্গীর, পাইকগাছা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু, কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (১৯৭৯-৯৫) ইউনুস সানার ছেলে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম সাইফুল্লাহ আল মামুন। বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান জানান দিয়ে এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের নের্তৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি তৃণমূলের সাধারণ নেতা-কর্মী ও ভোটারদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন। পরিবর্তনে বিশ্বাসী অংশের দাবি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা পাইকগাছা-কয়রার সন্তানদের যে কাউকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। স্থানীয় সরকার পরিষদের দলীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে দলীয় স্বার্থে তারা পক্ষেই কাজ করবেন। সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের মধ্যে এলাকার প্রতি আকর্ষণ-ভালবাসা কাজ করার মানষিকতা বেশি থাকে। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) এ প্রার্থী হিসেবে সেরা কে বেছে নিবেন এমনটা প্রত্যাশা সাধারন মানুষের।