যশোরের চৌগাছায় এইচএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে ধরা পড়েছেন এক ছাত্র। তাকে পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে প্রথমে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রকৃত পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভূয়া পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রে সচিব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তাকে এ মামলা আটক দেখানো হয়।
রোববার (২৭ আগষ্ট) এইচএসসি বিএম শাখার পরীক্ষা শুরু হয়। এই পরীক্ষার চলাকালে উপজেলার সরকারি কলেজে কেন্দ্রে একই উপজেলার তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। এই পরীক্ষায় বিএম শাখার ২য় বর্ষের প্রবাসি শিক্ষার্থী আলী রেজার হিসাববিজ্ঞান নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে পরীক্ষা দিতে যায় উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের বড়কাবিলপুর গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে সুমন হোসেন। শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ৩৬১৬৮৬ এবং রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ৪৪০০১০০১৭২।
এ সময় উপজেলা আইসিটি সহকারি প্রোগ্রামার আশরাফুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার হায়দার আলী ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। কেন্দ্র পরিদর্শনকালে উপজেলা আইসিটি সহকারি প্রোগ্রামার আশরাফুল ইসলামের সন্দেহ হয়। তিনি ওই পরীক্ষার্থীকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং বিষয়টি কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষকদের জানান। পরে সুমনকে জিজ্ঞাসা করে এবং প্রবেশপত্র যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হয় যে সে অন্যের পরীক্ষা দিচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সুমন জানায় সরকারি কলেজের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তাকে ডেকে নিয়ে এসেছে।
পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি ভূয়া পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পুলিশে দেওয়া নির্দেশ দেন কেন্দ্র সচিবকে। একই সাথে প্রকৃত পরীক্ষার্থীকে সকল পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করার জন্য বলেন।
একদিকে অনেকেই বলেছেন, একটি চক্র অনেক দিন থেকে পরীক্ষা কমিটিকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দেহ পরিবর্তন করে পরীক্ষা দেওয়াসহ পরীক্ষা কেন্দ্রে নানা অনিয়ম করে আসছে। এইচএসসি পরীক্ষার সময় উপজেলায় কলেজ গুলোর শিক্ষকদের নীতি নৈতিকতা বির্ষজন দিয়ে তারা রীতিমত অনিয়মের প্রতিযোগীতায় নেমে পড়েন।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের শিক্ষার্থী আলীরেজা দেশে থাকে না। সে অনেকদিন আগেই বিদেশ চলে গেছে। তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটু বলেন. তার অভিভাবক এসে প্রবেশ পত্র নিয়েছেন। যে কারণে আমরা জানতে পারিনি সে কোথায় থাকে। তার পরিবর্তে কে পরীক্ষা দিচ্ছে এটা কেন্দ্রের ব্যাপার।
সরকারি কলেজ কেন্দ্রের সচিব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম কবির ও চৌগাছা থানার ডিউটি অফিসার কামাল হোসেন ওই শিক্ষার্থীর মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজ ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। সেখানে কারো জড়িত থাকার প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।