কেশবপুরে ট্রাক্টর মালিকের অবহেলায় ট্রাক্টরের ফালে মারাত্নক জখম এক দীনমজুর যুবক পা হরিয়ে পঙ্গুত্ব জীবন যাপণ করছে। ট্রাক্টর মালিক তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের আশ্বাস দিলেও এখন তিনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফলে অর্থাভাবে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ওই যুবক মানবেতর জীবন যাপণ করছে। এ ঘটনায় ট্রাক্টর মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সরাফপুর গ্রামের ইব্রাহিম মোল্যার ছেলে ট্রাক্টর মালিক আবদুস সালাম মোল্যা তার ট্রাক্টর চালানোর জন্যে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবদুস সাত্তার সরদারের ছেলে হাশেম আলী সরদারকে চালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। গত ১৬ জুলাই আবদুস সালাম মোল্যা পার্শ্ববর্তী রঘুরামপুর মাঠে জমি চাষের জন্যে চালক হাসেম আলী সরদারকে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাশেম আলী জানান, ট্রাক্টর মালিক আবদুস সালাম মোল্যা নিজেই জমি চাষ করা কালিন হঠাৎ ট্রাক্টর থামিয়ে আমাকে রোটারের ফালের নাট টাইট দিতে বলেন। আমি পেছনের চাকার ফাঁকে ঢুকে রোটারের ফালের নাট টাইট দিয়ে বের হওয়ার আগেই সে ট্রাক্টরের রোটার চালু করে দেয়। এতে আমার ডান পা রোটারে পেঁচিয়ে মারাত্নক জখমের শিকার হয়। পরবর্তীতে সে আমার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এলাকাবাসি রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হাসেম আলী সরদারকে উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় যশোর পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে ডাক্তার তাৎক্ষণিকভাবে তার ডান পার কুচকির গোড়া থেকে কেটে বাদ দেয়। বারং বার অপারেশন করার কারণে তার ৬০ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। এছাড়াও তার বাম পা রোটারের ফালায় মারাত্নক জখম হয়। বর্তমান চিকিৎসার জন্যে তার ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু দিনমজুর পরিবারের পক্ষে এতা টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। হাসেম আলীর পরিবার সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, ট্রাক্টর মালিক আবদুস সালাম মোল্যা চালক হাসেম আলী সরদারের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহনের আশ্বাস দিলেও, এখন আর কোনো খরচ দিবে না বলে দীনমজুর পরিবারকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ফলে তার চিকিৎসা সেবা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে হাসেম আলী সরদারের ভাই তোফাজ্জেল সরদার গত ১৩ আগস্ট ট্রাক্টর মালিক আবদুস সালাম মোল্যাকে অভিযুক্ত করে কেশবপুর থানায় অভিযোগ করলেও অদ্যাবধি কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ ব্যাপারে চিংড়া ফাড়ি ইনচার্জ এসআই আবদুল কাদের জানান, বিষয়টি নিরসনে উভয় পক্ষকে অচিরেই ডাকা হবে। দীনমজুর হাশেম আলী যাতে অর্থ সহায়তা পায় তার ব্যবস্থা করা হবে।