আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল হাতিরঝিলের চেয়েও বেশি নান্দনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। আজ বুধবার আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। মেয়র তাপস বলেন, হাতিরঝিলের কাজ শেষ করতে প্রায় ১০ বছর লেগেছিল। আর হাতিরঝিল কিন্তু বদ্ধজলাশয়। এটা (আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল) উন্মুক্ত নদীর অববাহিকা। এখানে একটু ভিন্নতা রয়েছে। যেহেতু নদীর অববাহিকা, সেহেতু এটিকে আরও সুন্দর, আরও বেশি নান্দনিক করে গড়ে তুলতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রকল্প প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান উল্লেখ করে মেয়র শেখ তাপস বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারে প্রথম পর্যায়ে নিজস্ব অর্থায়নে আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিলাম। সেখান থেকে প্রায় ২৩ টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের খননকাজ সম্পন্ন করেছি। আপনারা জানেন, এই নদীর অববাহিকা পূর্ণরূপেই ভরাট করে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এখন নদীপ্রবাহের সেই অববাহিকা আবার ফিরে এসেছে। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা আমাদের বাজেটে নিজস্ব অর্থায়নে আরও প্রায় ৩৫ কোটি টাকা অর্থ সংস্থান রেখেছি এবং সীমানা নির্ধারণের কাজ চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের খননকাজ বিশেষ করে এই বেড়িবাঁধের পাশ দিয়ে ঢালের যে অংশ দখল হয়ে গিয়েছিল সেই অংশটা আমরা এই মৌসুমে পূর্ণরূপে দখলমুক্ত করতে চাই। তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ করেছি। তারা প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। যেহেতু এই চ্যানেলটি কালুনগর স্লুইচ গেট থেকে মুসলিমবাগ পর্যন্ত সাত কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত, সেহেতু ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে এক কিলোমিটার করে বা অংশ অংশ ধরে কিংবা যেভাবে পরামর্শকরা উপযুক্ত মনে করেন সেভাবেই নকশা প্রণয়নের জন্য আমরা তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। সে কাজটি এখন চলমান রয়েছে। আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার আশাবাদ জানিয়ে মেয়র শেখ তাপস বলেন, এটি অত্যন্ত দুরূহ ও বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রকল্প প্রণয়ন করা, প্রকল্প থেকে অর্থসংস্থান পাওয়া, তারপর দরপত্র করে কাজ শুরু করা- এগুলো অনেক দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়ে এবং দীর্ঘসময় লাগে। এজন্য আমাদের যেসব কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে সেসব কাজ এগিয়ে নিতে আমরা তা নিজস্ব অর্থায়নেই করে চলেছি। তিনি বলেন, হাতিরঝিলের মতো দীর্ঘ ১০ বছর যেন না লাগে সেজন্যই আমাদের এই কর্মকৌশল। গতবছর আমরা যখন (বর্জ্য অপসারণ, দখলদার উচ্ছেদ ও সীমানা নির্ধারণ) শুরু করি তখন কিন্তু এটার নদীর অববাহিকা ছিল না। আমরা সেই কাজটি করতে পেরেছি। এখন পানিপ্রবাহ হচ্ছে। পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে। সুতরাং প্রাথমিক কাজটা আমরা সম্পন্ন করেছি। আমরা যদি প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা করতাম তাহলে এই কাজটায় এতদিন কিছুই হতো না। আমরা আশা করছি, প্রকল্প পাস করে কাজ সম্পন্ন করতে হয়তো বা তিন বছর সময় লেগে যেতে পারে। এর মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগের কাজগুলো আমরা চালিয়ে যাবো।