গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের জন্য সম্মান নিয়ে এসেছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, নোবেলজয়ী হিসেবে তাকে সম্মান করি।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ইন্দোনেশিয়া সফর উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের মামলার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। একজন নোবেলজয়ী হিসেবে তাকে সম্মান করি। তিনি আমাদের জন্য সম্মান নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এখানে একটি মামলা আছে, তার কোম্পানি যে লাভ করেছে, যতদূর আমি জানি সেই লাভের কিছু অংশ শ্রমিকদের দিতে হয়। এটা বাংলাদেশের আইন। যখন আপনি আয় করবেন, তখন পাঁচ শতাংশ লাভ শ্রমকিদের সঙ্গে শেয়ার করতে হয়। দুভার্গ্যজনকভাবে আমরা শুনেছি, তার কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের ঠকিয়েছে।
তিনি বলেন, আইনগত বিষয়ের ওপর আমরা কোনো ব্রিফিং করতে চাই না। আদালতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশে থাকার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনেকের কাছে মনে হয় জিনিসটা খুব স্পষ্ট নয়। তারা মনে করেন, রাজনৈতিক কিংবা অন্য কারণে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা যতদূর জানি, মামলাগুলো সরকার করেনি। তার বিরুদ্ধে দুটো মামলা আছে। দুনিয়াতে বহু নোবেলজয়ী আছেন, তাদেরও সাজা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা আদালতে ঠিক হবে। আদালতের বিষয় আমাদের বলা উচিত নয়। দ্বিতীয় মামলাটি তিনি অনেক লাভ করেছেন। কিন্তু লাভ করলে দুনিয়ার সব দেশের নিয়ম অনুসারে কর দিতে হয়। কিন্তু তিনি কর ফাঁকি দিয়েছেন। সব দেশেই কর ফাঁকি বড় ধরনের মামলা। কাজেই সরকার কোনো হয়রানিমূলক মামলা করেনি।
‘এখানে দুটি কারিগরি বিষয়, একটি হচ্ছে কর ফাঁকি দেওয়া, আরেকটি হচ্ছে শ্রমিকদের পয়সা না দেওয়া। আর এ কারণেই মামলা হয়েছে। যারা চিঠিপত্র দিয়েছেন, তারা হয়তো জানেন না। তারা ভেবেছেন, কোনো রাজনৈতিক কারণে হয়তো এই মামলা হয়েছে। আমি আশা করবো, যারা চিঠি লিখেছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে আরও জানবেন। তারা যদি জানতে চান, আমরা অবশ্যই তাদের তথ্য দেবো।’
‘তারা যদি জানতে চায়, আমরা জানাব’ বলেছেন। আপনারা নিজ উদ্যোগে কোনো কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের আয়োজন করবেন কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি আইনগত বিষয়। এ বিষয়ে আমরা নিজ উদ্যোগে কিছু করবো না। আইনগত বিষয়ের ওপর আমরা কোনো আইনগত ব্রিফিং করতে চাই না। আমাদের দেশ খুবই স্বাধীন। বিদেশি বড় বড় নেতারা যদি হট্টগোল করে মামলা উঠিয়ে নিতে বলেন, আমাদের জন্য তা সম্ভব না।
‘আমরা সেসব নামিদামি লোকজনকে বলতে চাই, আমাদের দেশের আইনি ব্যবস্থা খুবই স্বচ্ছ। সেখানে আমাদের কিছু করার নেই। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালতকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা আমাদের নেই।’
বিশ্বনেতাদের বিবৃতিকে আপনারা চাপ মনে করেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোনো চাপ মনে করছি না। ইনফরমেশন গ্যাপ আছে। এসব বড় বড় নেতাকে কেউ হয়তো বলেছেন যে বাংলাদেশে এমন নামি লোককে হয়রানি করা হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এখানে যথেষ্ট ইনফরমেশন গ্যাপ আছে, অজ্ঞতার কারণ আছে।