ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের বেগবতি নদীর-মাঝখানে-বাঁধ-দিয়ে অবাধে-মাছ-শিকার করছে। কিন্তু এভাবে অবৈধভাবে নদীর মাঝখানে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের বাঁধ দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হলেও বিষয়টি দেখার কেউ নেই। ‘মৎস্য আইনে স্পষ্ট ভাবে বলা আছে নদীর মাঝখানে স্থায়ীভাবে কোনো বেড়া বা বাঁধ দেয়া যাবে না। এতে করে দেশীয় ছোট মাছের বংশ বিস্তার হয় না। এ আইন থাকলে ও কালীগঞ্জের বেগবতি নদীতে দেদারছে মাছ শিকার করা হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ও জামাল ইউনিয়নের বেগবতি নদীর মাঝখানে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের বাঁধ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে একটি চক্র। মৎস্য আইনকে উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে মা-মাছ ও পোনাসহ সব ধরনের মাছ নির্বিচারে শিকার করে আসছে চক্রটি। উপজেলার মালিয়াট ও জামাল ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বেগবতি নদীটি বয়ে গেছে। সেখানে আড়াআড়ি ভাবে নদীতে প্রায় ৭০০ ফুট পর্যন্ত বাঁশ পুঁতে বেড়া দেয়া হয়েছে। বেড়ার সঙ্গে সুতি জাল, স্থানীয় কাঁথা জালসহ বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে রাখা হয়েছে। এ বাধের কারণে নদীতে ঠিকমত পানি প্রবাহিত হতে পারে না। বাঁশের বেড়ার কিছু দূর পরপর রয়েছে একটি করে মুখ। নদীর ¯্রােতের সঙ্গে আসা মাছগুলো আটকা পড়ে এই মুখেই। যেখানে ধরা পড়ে মা-মাছ ও পোনাসহ সব ধরনের মাছ। এসব মাছের মধ্যে থাকে চিংড়ি থেকে শুরু করে পুঁটি, ট্যাংরাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে এখানে বেড়া দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। প্রতি বছরই এভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরে এলাকার প্রভাবশালীরা। তারা বলছেন, এভাবে নির্বিচারে শিকারের কারণে বেগবতি নদীতে দেশীয় মাছও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ‘মৎস্য আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে নদীর মাঝখানে স্থায়ীভাবে কোনো বেড়া বা বাঁধ দেয়া যাবে না। এতে করে দেশীয় ছোট মাছের বংশ বিস্তার হয় না।’ইতোমধ্যে পানি বরাবর মাটি.বেড়া,জাল দিয়ে বাঁধ তৈরির করে তার এক পাশে জাল আরেক পাশে বায়না দিয়ে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করে ফেলেছে। এতে নদীর নাব্যদা হারাচ্ছে। নদী শুকিয়ে মাছ শিকার করায় দেশীয় প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি। এ ছাড়া শুকনো মৌসুমে ফসলের জমিতে সেচের ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় পানির তীব্র সংকট।
বিশেষ করে এ মাছ ধরাবাধ দেওয়ার করনে মাছের চলাচলে বাধা ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে। কয়েক মাস ধরে এভাবে মাছ শিকার করা হলেও প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। প্রবাহমান কোনো জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনো ভাবে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নদীতে পানির প্রবাহ ও মাছের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নদীর এ পাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত বাঁশের বাঁধের মাঝ দিয়ে পাতা হয়েছে কারেন্ট জাল। এরই একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বে জাল দিয়ে বিশেষ ধরনের ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এসব ফাঁদে মাছ এসে আটকে যায়। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার মাছ আহরণ করা হচ্ছে এ বাঁধ থেকে। পাঙ্গাস থেকে শুরু করে বেলে মাছ, খরসাল্লা মাছ, পাবদা, আইড়, পুটি, ট্যাংরা, জিয়েল, কেয়সহ নানা ধরনের মাছ ধরা পড়ছে। এসব মাছ কালীগঞ্জ, কোলাবাজার, বারবাজার, মঙ্গলপৈাতা, খোড়ারবাজাসহ বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে নিয়ে যাওয়া হয়। দেওয়ার কারণে অন্যান্য জেলেরা স্বাভাবিক ভাবে মাছ ধরতে পারে না। এতে অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিরা আর্থিক ভাবে লাভবান হলেও গরিব জেলেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করেন।