এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) খেলা মাত্র একজন খেলোয়াড় ছিলেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে। আটলান্টা ইউনাইটেডের ২২ বছর বয়সী থিয়াগো আলমাদা। কিন্তু গত শুক্রবার ঘোষিত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন এমএলএসের তিনজন খেলোয়াড়। আলমাদা তো আছেনই। বাকি দুজনের একজনের নাম তো সবারই জানা, পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ লিওনেল মেসি। অন্যজন? এফসি ডালাসের ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার/ফরোয়ার্ড অ্যালান ভেলাসকো। যিনি প্রথম বার জাতীয় দলে ডাক পেয়েই গড়েছেন ইতিহাস। ক্লাব এফসি ডালাসের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ভেলাসকো ডাক পেলেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মুকুটধারীদের জাতীয় দলে। সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। এই বাছাই যুদ্ধ সামনে রেখে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার বাকি সব দেশ আগেই দল ঘোষণা করেছে। দেরি করছিল শুধু বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। যারা আগামী ৭ ও ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দুটি ম্যাচ খেলবে। ইকুয়েডর ও বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দুটির জন্য অবশেষে গত শুক্রবার ৩২ সদস্যের দল দিয়েছেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেই দলের সবচেয়ে বড় চমক, ৩২ সদস্যের দলের ৪ জনই অনূর্ধ্ব-২৩ খেলোয়াড়। যারা জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন প্রথম বারের মতো। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলেও তারা অনুশীলন করবেন আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সঙ্গেই। সেই চার জনেরই একজন অ্যালান ভালেসকো। ইন্টার মায়ামির হয়ে মেসি এরইমধ্যে প্রতিপক্ষ হিসেবে আলমাদা ও ভেলাসকোর মুখোমুখি হয়েছেন। গত ২৬ জুলাই লিগস কাপের ম্যাচে মেসি মুখোমুখি হয়েছিলেন আলমাদার আটলান্টা ইউনাইটেডের। সেদিন মেসির জোড়া গোলে ইন্টার মায়ামি আলমাদার আটলান্টাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল। এরপর ৬ আগস্ট লিগস কাপে শেষ ষোলোর ম্যাচে ভেলাসকোর এফসি ডালাসের মুখোমুখি হয় মেসির ইন্টার মায়ামি। ম্যাচে মেসির জোড়া গোলের বিপরীতে ভেলাসকোও নিজ দলের হয়ে করেন একটি গোল। ম্যাচটি ৪-৪ গোলে ড্র হওয়ার পর টাইব্রেকারে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেন মেসিরা। ম্যাচে শেষে স্বদেশি তরুণ ভেলাসকোর সঙ্গে একান্তে কথাও হয় মেসির। তখনো কি মেসি জানতেন, কদিন পরই সে তার জাতীয় দল সতীর্থ হতে যাচ্ছেন! নাকি মেসির সুপারিশেই ভেলাসকোকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করেছেন আর্জেন্টিনার স্কালোনি। আর্জেন্টিনা দলে চমক আছে আরও। চোট না থাকা সত্ত্বেও দলে ফিরতে পারেননি তারকা মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসো। তবে পাওলো দিবালা, মার্কোস অ্যাকুনা, রুলিদের জায়গা হয়নি চোটের কারণে।
আর্জেন্টিনার ৩২ সদস্যের দল
গোলরক্ষক: এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), হুয়ান মুসো (উদিনিসে), ওয়াল্টার বেনিতেজ (পিএসভি আইন্দোহোফেন) ও ফ্রাঙ্কো আরমানি (রিভারপ্লেট)।
ডিফেন্ডার: নাহুয়েল মলিনা (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ), জার্মান পেজেলা (রিয়াল বেটিস), গনজালো মান্তিয়েল (নটিংহাম ফরেস্ট), হুয়ান ফয়োথ (ভিয়ারিয়াল), মার্কোস সেনেসি (বোর্নেমাউথ), লিসান্দ্রো মার্টিনেজ (ম্যানউই), ক্রিস্টিয়ান রোমেরো (টটেনহাম), নিকোলাস ত্যাগলিয়াফিকো (অলিম্পিক লিঁও), নিকোলাস ওটামেন্ডি (বেনফিকা) ও লুকাস এজকুইভেল (অ্যাথলেটিকো প্যারানায়েন্স)।
মিডফিল্ডার: লিয়ান্দ্রো পারেদেস (এএস রোমা), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ), গুইদো রদ্রিগেজ (রিয়াল বেটিস), ফাকুন্দো বোউনানত্তে (ব্রাইটন), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (লিভারপুল), এজেকুয়েল প্যালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), ব্রুনো জাপেলি (অ্যাথলেটিকো প্যারানায়েন্স) ও থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড)।
ফরোয়ার্ড: নিকোলাস গনজালেজ (ফিওরেন্তিনা), লাওতারো মার্টিনেজ (ইন্টার মিলান), অ্যানহেল কোরেয়া (অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ), জুলয়ান আলভারেজ (ম্যান সিটি), আলেসান্দ্রো গারনাচো (ম্যানইউ), অ্যানহেল ডি মারিয়া (বেনফিকা), অ্যালান ভেলাসকো (এফসি ডালাস), লুকাস বেলট্রেইন (ফিওরেন্তিনা) ও লিওনেল মেসি (ইন্টার মায়ামি)।