২৫১ বছরের পুরনো ঐতিহ্য ও দিনাজপুরের রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহাসিক কান্তজীউ মন্দির হতে শ্রীশ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ নৌপথে দিনাজপুর শহরের রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে বেশ কয়েটি স্থানে পুজা অর্চনা শেষে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাজবাড়ীতে পৌছাবে এই যুগল বিগ্রহ।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সকাল ৮ টায় ঐতিহ্যবাহী কান্তজীউ মন্দির হতে পূজা অর্চনা শেষে শ্রীশ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ পূর্ণভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়। সেখানে দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল উপস্থিত থেকে শ্রীশ্রী কান্তজীউ যুগল বিগ্রহ’র নৌবহর যাত্রার বিদায় জানান। সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আরেক রুপ কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে পূর্ণভবা নদীর দুই তীরে ভক্ত-পূণ্যার্থীর ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজ দোবোত্তর এস্টেট এর এজেন্ট রণজিৎ কুমার সিংহ, কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী, সাধারন সম্পাদক রতন সিংহ, ডা. ডি সি রায় প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ বছর আগে। সেই বংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে দিনাজপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর এলাকায় কান্তজিউ মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এই মন্দিরের কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। সেই সময় থেকেই কান্তজিউ বিগ্রহ নয় মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাখা হয়। জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজিউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হয়।
কান্তজীউ মন্দির হতে দীর্ঘ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুরঘাট পর্যন্ত শতাধিক ঘাটে কান্তজিউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভিড়ানো হবে। নৌকাযোগে দিনাজপুর আসার সময় হিন্দু ধর্মালম্বী হাজার হাজার ভক্ত নদীর দুই কুলে কান্তজিউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ীর বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সাকসবজি নিয়ে আসে। এ সময় নদীর দুই কুলে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্যের ভীড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।