ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। কেউ স্বীকার করুন আর না করুন, চলতি বছর ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে, এটিই বাস্তব। দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেন বেড়েই চলছে। ঢাকার বাইরে এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। যদিও চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল বছরের শুরু থেকেই। সেই আশঙ্কাকে বাস্তবতায় রূপ দিয়ে দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে পরবর্তী আরও ২৩ বছরে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুলাই মাস পর্যন্ত এত বেশি সংখ্যক রোগীর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর তথ্যও এর আগে পাওয়া যায়নি কোনো বছর। তবে এমন অবস্থায় মশা নিধন কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনা করা না গেলে পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত্র ও মৃত্যুর হার বাংলাদেশের ইতিহাস ছাড়িয়ে যাবে। প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ ব্যাপক আকারে বেড়েছে। বিছানা, মেঝে, বারান্দা কোথাও জায়গা মিলছে না। রোগী বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে সেবা প্রদান করতে গিয়ে চিকিৎসক-নার্সরা যেমন হিমশিম খাচ্ছেন তেমনি রোগীরাও পড়ছেন নানান ভোগান্তি আর বিড়ম্বনায়। একই সঙ্গে রোগী বাড়ায় ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্লাটিলেট, পরীক্ষার জন্য কিট এবং ডিএনএস স্যালাইনের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের সঙ্কটে রোগীদের চিকিৎসা সোব ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বেড না থাকা, রক্তের প্লাটিলেট দেয়ার ব্যবস্থা না থাকা, আইসিইউ ব্যবস্থা না থাকাসহ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরের রোগীর চাপ বাড়ছে। আমাদের দেশে এডিস মশা মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর মধ্যে পরিকল্পনা, সমন্বয় ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট র্কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। চলতি সেপ্টেম্বর মাস হবে ডেঙ্গুর জন্য আরও ভয়ংকর। তাই আমাদের এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে। মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। এডিস মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব পরামর্শ দিয়েছিল, সেগুলোরও বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও কার্যকর উদ্যোগ হাতে নিতে হবে। তাহলে হয়তো ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হতে পারে।