জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম নগরীর জন্য এক অভিশাপ। তবে এখন জলাবদ্ধতার চেয়েও বড় ভয়ংকর হয়ে উঠছে ড্রেন অর্থাৎ নালা। নগরের বিভিন্ন সড়কের নালা উন্মুক্ত থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় নগরবাসীদের। এমনকি পথচারীদের মৃত্যু হলেও কারই টনক নড়ে না। চট্টগ্রাম নগরের এই উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে ২০২১ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শিশুসহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্ষার সময় ছোট-বড় এসব নালা অনেক সময় জলাবদ্ধতার কারণে দেখা যায় না, আবার অনেক সময় অসাবধানতার কারণেও এই ড্রেনগুলোতে সাধারণ মানুষ পড়ে যায়। আর তখনই সৃষ্টি হয় দুর্ঘটনা। নিভে যায় জীবন প্রদীপ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দায়ীত্বহীনতার ফলে, জলাবদ্ধতার কারণে এখন রাস্তার পাশে খাল-নালাগুলোই হয়ে উঠে একমাত্র মৃত্যুফাঁদ। এই ড্রেনে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বিরাট ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। উন্মুক্ত নালা-খালে পড়ে একাধিক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-কেউ এসবের দায় নেয়নি। লোকজনের মৃত্যুর জন্য উল্টো পরস্পরকে দায়ী করে আসছে সংস্থা দুটি। এর জরুরি অবসান প্রয়োজন। এভাবে একের পর এক মৃত্যু হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা সবাইকে ব্যথিত করে। এত প্রাণহানি ও আহত হওয়ার পরও এ বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি আর যাবে কিনা বলাও যায় না। কেননা উন্মুক্ত নালাগুলো এখনো অরক্ষিত। কোনো ধরনের স্ল্যাব কিংবা নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়া হয়নি। নেই কোনো পরিকল্পনা। চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ এতে ক্ষুব্ধ। এ অঞ্চলের মানুষের গলার কাঁটা হয়ে আছে এই সমস্যাটি। অথচ বছরের পর বছর এই একটা সমস্যার সমাধান করে দেবে বলে চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে ছলনা করে যাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? এই এক সমস্যা নিয়ে এই অঞ্চলের মানুষ বসবাস করবে। তাই দ্রুত ড্রেন, নালা মরামতের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্তিপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে দ্রুত নালা-নর্দমা ও খালের পাড় ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ করা হোক।