“আমরা ছাত্রলীগ, তোরা পুলিশ লীগ। আজকে পুলিশ পেটাবো” বলেই ট্রাফিক সার্জেন্ট মনিরুল ইসলামের ওপর অর্তকিতভাবে হামলা চালায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০/২৫ জন শিক্ষার্থীরা। মোবাইল ফোনে হামলার ভিডিও ধারণ করায় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মোস্তফা জামালকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সার্জেন্ট মনিরুল ইসলামের ওয়ারলেস ও বডি অন ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যদিও পরবর্তীতে তা উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নগরীতে কাগজপত্র বিহীন মোটরসাইকেল আটক করার অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেল চালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রকে আটক করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
নগরীর বান্দ রোডের পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে সাজেন্ট ও কনস্টবলের ওপর হামলার পর উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা ঘন্টাব্যাপী অবরোধ করে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় তারা আটককৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি করেন।
সড়ক অবরোধের ফলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দুরপাল্লার যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে। পরবর্তীতে বন্দর থানার ওসি আবদুর রহমান মুকুল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হামলায় আহত সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মোস্তফা জামালকে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করার কোনো মানে হয় না। শিক্ষার্থীরা অঙ্গীকার করেছে তারা আর সড়ক অবরোধ করবে না।
আহত সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম বলেন, রাত সোয়া সাতটার দিকে নগরীর শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের সামনে তিনজনকে বহনকারী একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করা হয়। গাড়ির কোন কাগজপত্র না থাকায় মামলা দিয়ে মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়। তখন একজন পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলে, আজকে পুলিশ পিটাবো। এ কথা বলেই তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে ২০/২৫ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে কেন মোটরসাইকেলটি আটক করা হয়েছে তা জানতে চায়। এ সময় তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগেই তারা বলে, আমরা ছাত্রলীগ-তোরা পুলিশ লীগ। বলেই অর্তকিতভাবে হামলা চালায়।
বুধবার সকালে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনভির ইসলাম ও রমজান হোসেন সোহাগ নামের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ওসি আরও জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটককৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।