ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করলেও কিছুকিছু ক্ষেত্রে এর সীমাবদ্ধতাও পরিলক্ষিত হয়। যেমন- ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে নতুন নতুন অপরাধ সংঘটন, যেগুলো রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষাপটে প্রণয়ন করা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বদলে করা হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন। মূলত সাইবার জগতে নানা অপরাধ বেড়ে যাওয়ার ফলেই সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে শুরু হয় সাইবার জগতের সুরক্ষা। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই এ আইনের কিছু ধারা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি তোলা হয় এবং সংশোধনের পরামর্শ দেয়া হয়। এরইমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পাঁচ বছরে সাত হাজারের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে অনেকেই হয়রানির স্বীকার হয়েছেন। বিনা জামিনে জেলে মারা গেলেন মুশতাক, এখনও জেলে রয়েছেন খাদিজাতুল কুবরা। আটক হন ২৫ জন সাংবাদিক। যা নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে চলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। যার পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার সাইবার জগতে অপরাধের ধরন ও বিদ্যমান বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেন। ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের শুরুতেই আমরা কিছু অপব্যবহার বা মিসইউজ দেখতে পাই। তাই গত ৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা পরিবর্তন করে নতুন আইনের খসড়া তৈরি করা হয়।’ সূত্র মতে জানাযায়, নতুন আইন পাস হলে আগেরটি বাতিল করা হবে। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে অংশীজন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ ছিল, আইনে সাজা কিছু কমানো ও ধারা জামিনযোগ্য করা ছাড়া বিষয়বস্তুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এতে মানুষের হয়রানি কমবে না। তাই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অনেক ধারাকে সংযুক্ত করে নতুন আইনটিকে আরও জোরদার করতে হবে। এ ছাড়া কেউ মিথ্যা মামলা করলে তার জন্য শাস্তির বিধান রাখাটা অত্যান্ত জরুরি। সাইবার নিরাপত্তা আইন যেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ারে পরিণত না হয় সে বিষয়টিও নজরে রাখতে হবে। পাশাপাশি পূবের্র আইনে করা মামলাগুলোও প্রত্যাহার এবং এই আইনে যারা ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ও কারাভোগ করেছেন তাদের মুক্তি দেওয়া হোক।