বর্তমান বাংলাদেশের এক অন্যতম আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। সে সময় ৫ হাজার ৫০০ মানুষ আক্রান্ত হয় ডেঙ্গুতে। এরপর থেকে প্রতি বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সবচেয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে চলতি এ বছর। এখন পর্যন্ত ৬৭১ জনের মৃত্যু, ১ লাখ ৩৮ হাজার ২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ২২৪ জন। তবে অনেক স্থানেই ‘কিট সংকট থাকায় হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।’ দিনদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি ডেঙ্গু পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। কেউ কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল এসেছে। এর কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করছেন, নকল কিট ব্যবহারের ফলেই এমনটা হয়েছে। দেশের হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে সরকার অনুমোদিত কিট ব্যবহার হচ্ছে বলে দাবি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। ডঙ্গু বাড়ার সাথে সাথে এ ভয়াবহতার সুযোগে একটি অসাধু চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশি লাভের লোভে চক্রটি চোরাই পথে ভারত থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষার ‘নকল’ কিট দেশে আনছে। এর একটি চালান ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। এসব কিট আসল নাকি নকল, তা জানতে পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এগুলো মানহীন বলেই ধারণা করা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আহ্বান করছি, নকল কিট চোরাই পথে দেশে আনার বিষয়ে তৎপরতা চালানো হোক। যেন অধিদপ্তরের অগোচরে কোনো হাসপাতাল-ক্লিনিক বা বেসরকারি অন্য কোনো পর্যায়েও সরকার অনুমোদিত কিট ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার না হয়। চোরাই পথে আসা এসব কিট অনুমোদিত নয়। এগুলো ব্যবহার করে পরীক্ষা করলে যে রোগীর ডেঙ্গু হয়নি- তাকেও ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হতে পারে। আবার যে আক্রান্ত তার ডেঙ্গু নেগেটিভ রিপোর্ট আসতে পারে। এ কিটের পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসক রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিলে তা রোগীর জন্য ভয়ংকর বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সকল কিটগুলো ল্যাবের মাধ্যমে পরীক্ষার করে ব্যবহার করা হোক, নইলে জনস্বাস্থ্য চরম হুমকিতে পড়বে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরও বাড়াতে হবে এবং আটকদের রিমান্ডে নিয়ে এ ঘটনার সঙ্গে আরও কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না খতিয়ে দেখতে হবে। এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক।