ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যত্রতত্রভাবে মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে যে যার মত যেখানে সেখানে মাংসের দোকান খুলে বসেছে। এসব স্থানে অস্বাস্থ্যকার পরিবেশে মাংস বিক্রি হচ্ছে। মাংস বিক্রির পর দোকান গুলির মধ্যে কুকুর শুয়ে থাকে ও মাংস বিক্রির খেটে চেটে খায়।
নিয়ম রয়েছে পশু জবাইয়ের পূর্বে গরু ছাগলের পরীক্ষা নিরিক্ষা করার। কিন্তু পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কালীগঞ্জে মাংস বিক্রির হচ্ছে দেদারছে। শহরের মধ্যে নেই কোন পশু জবাইয়ের কসাইখানা। যার কারণে ক্রেতারা সু¯্য’ না অসুস্থ গরু ছাগলের মাংস কিনছেন তারা নিজেরাও জানেন না। আর খাতা কলমে এসব দেখভাল করার জন্য কর্মকর্তারা থাকলেও বাস্তবে তাদের কোন কর্মকা- পরিলক্ষিত হয় না।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার কয়েকটি প্রধান সড়কের মোড়ে মোড়ে অন্তত ১২টি স্থানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরু - ছাগলের মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট কসাইখানা না থাকায় লোকজন মরা বা রোগাক্রান্ত গরু ছাগলের মাংস খাচ্ছে কিন্ াতা র্কাও বোঝার উপায় নেই। কালীগঞ্জ পৌর ও উপজেলা স্যানেটারি কর্তৃপক্ষের দেখভাল একেবারেই নেই। সড়কে সারা দিন যানবাহন চলাচল করে তাতে ধুলাবালিতে মাংস গুলো খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
কালীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার, হাটচাঁদনী, নলডাঙ্গা রোড, হাসপাতাল রোড, কাঠের ব্রিজের মুখ, নীমতলা বাসস্ট্যান্ড, বৈশাখি মোড়, পাইকপাড়া মোড়. কাশিপুর, ভুষনস্কুল সড়কসহ একাধিক স্থানে গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। নিজেদের ইচ্ছেমত রুগ্ন ও অসুস্থ গরু ছাগল যেখান সেখানে জবাই করে দোকানে এনে বিক্রি করছে। গরু ও ছাগল জবাইয়ের পূর্বে ভেটেরিনারী কর্মকর্তাদের উপস্থিততে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তা জবাই করার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে সেটা করা হচ্ছে না। কোথায় কিভাবে এসব পশু জবাই হচ্ছে তাও জানেন না স্যানেটারি ইন্সপেক্টর। মাংস ঝুলিয়ে বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও সেসব নিয়মনীতি তোয়াক্কা করেন না বিক্রেতারা।
এ ব্যাপারে নতুন বাজারের ছাগলের মাংস বিক্রেতা কবির হোসেন জানান, তিনি নিজবাড়ি থেকে ছাগল জবাই করে দোকানে এনে বিক্রি করেন। জবাইয়ের পূর্বে ছাগলের কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন না। বিক্রি শেষে দোকান অরক্ষিত অবস্থায় রেখে যান এবং সেখানে কুকুর শুয়ে থাকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। এখন থেকে দোকানটি ঘিরে রাখবো। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। শিবনগর গ্রাম থেকে মাংস কিনতে আসা শমসের আলী জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস বিক্রি হচ্ছে জেনেও বাধ্য হয়ে তা কিনতে হচ্ছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর কবির জানান, অনেক সময় অস্বা¯্য’কর পরিবেশে মাংস বিক্রি হয়ে থাকে। আমরা সেটা নিয়মিতভাবে দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু পৌর এলাকার মধ্যে কোন কসাইখানা নেই। একটি ছিল, সেটি নষ্ট হয়ে পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে। নতুন করে আর কোন কসাইখানা করা হয়নি। কসাইখানা নির্মাণ আমি তো করতে পারি না এ ব্যাপারে আপনি পৌর মেয়রের সাথে কথা বলেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রেজাউল ইসলাম বলেন, এটি দেখভাল করবেন পৌরসভা ও উপজেলা স্যানিটারি অফিসার। এখানে আমাদের কোন এক্টিভিটিস নেই। পৌরসভার নিজস্ব জায়গা থাকলে আমরা প্রজোক্টেরের মাধ্যমে একটি ভাল কসাইখানা করে দিতে পারি। এ ব্যাপারে আমি মেয়রের সাথে কথাও বলেছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, এটি তো পৌরসভার দায়িত্ব। আমি স্যানেটারি ইন্সপেক্টরকে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে বলবো। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পশু জবাই ও বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।