লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মো. জাকির হোসেন সুমন নামে এক তালাকপ্রাপ্ত স্বামী তার স্ত্রী রাশেদা আক্তার (২২) ও শ্বশুর বাদশা মিয়াকে (৫০) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় শাশুড়ি আঙ্কুরী বেগমকে (৪৫) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তাকে মুমূর্ষূ অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরকলাকোপা গ্রামে এ নৃশংস হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। নিহত বাদশা মিয়া চর কলাকোপা গ্রামের মৃত তোবারক আলীর ছেলে। তিনি পেশায় ইট ভাটার শ্রমিক এবং ৪ ছেলে ১ কন্যা সন্তানের বাবা ছিলেন। ঘাতক সুমন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়নের (৪নং ওয়ার্ড) পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে সুমন পলাতক রয়েছেন।
খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যন্ড অপস্) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন, কমলনগর-রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সুনের সঙ্গে উপজেলার চর কলাকোপা গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে রাশেদার সঙ্গে ৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রাশেদা গার্মেন্টেসে চাকুরী করার সুবাদে তারা চট্টগ্রামে বসবাস করত এবং তাদের সংসারে জাহিদ নামে ৩ বছরে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই সুমন স্ত্রী রাশেদাকে মারধর করত। এতে করে রাশেদাকে তার বাবা-মা নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং কিছুদিন পর রাশেদার সাথে স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।
গত ১৮-২০ দিন আগে রাশেদার মা-বাবা তাকে নোয়াখালী সদরের আন্ডারচর এলাকার আবদুল কাদের নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। তবে সুমন তার স্ত্রীর বিয়ের বিষয়টি জানতেন না। বুধবার সন্ধ্যায় সুমন তার স্ত্রীকে নিতে আসলে বিয়ের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে এসব নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী রাশেদা, শ্বশুর বাদশা ও শাশুড়ি আঙ্কুরী বেগমকে কুপিয়ে সুমন পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলেই রাশেদা ও তার বাবা বাদশা মারা যান। আহত অবস্থায় আঙ্কুরীকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, বিয়েবিচ্ছেদের জের ধরে স্ত্রী ও শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করে সুমন। এ সময় আহত হয় শাশুড়ি। তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক সুমন পলাতক রয়েছে। তাকে আটক করতে পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।