প্রায় ১০ বছর পর লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আর এই সম্মেলনকে ঘিরে নতুন নেতা কর্মীদের মুখ দেখা গেলেও প্রবীণ নেতাকর্মীর পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। ফলে দির্ঘদিন পরে আনন্দের সম্মেলনের মধ্যেও কষ্টের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে জেলা জাতীয় পার্টির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন নেতাকর্মী পদত্যাগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আর নেতাকর্মী পদত্যাগ করার চিঠিটি স্বাভাবিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে কারণে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে নতুন করে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নেতা-কর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন না করা, সরকারি প্রজেক্ট বরাদ্দে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিবের একক আধিপত্যে নেতা-কর্মীরা তার প্রতি নাখোশ। এ কারণেই সম্মেলনের আগে তারা পদত্যাগ করছেন। এছাড়াও পুরাতন নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করে বিভিন্ন সভা সেমিনার করছে। এতে করে প্রবীন নেতাকর্মীরা ক্ষোভ ঝরাচ্ছেন পদত্যাগের মাধ্যমে। নির্বাচনের আগে নেতা-কর্মীদের গণ পদত্যাগ ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টিতে প্রভাব ফেলবে বলে স্থানীয় রাজনীতিবিদরা ধারণা করছেন।
সম্প্রতি পৌর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম আউয়াল, জেলা জাতীয় তরুণ পার্টির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, সদর উপজেলা জাতীয় তরুণ পার্টির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম রাজু, পৌর সভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় তরুণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র রায়, একই ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম ও একই ওয়ার্ডের ৩৫ জনসহ মোট অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী একযোগে পদত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে সদ্য পদত্যাগ করা পৌর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম আউয়াল বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এখানে নেতা-কর্মীদের কোনো মূল্যায়ন নেই। তাছাড়া দলের সদস্য সচিবের একক আধিপত্য বিস্তারের কারণে কোনো নেতা-কর্মী দাম পায় না। তিনি যা করবেন তাই। আমাদের কথার কোনো মূল্যায়ন নাই। তাই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পদত্যাগকৃত নেতা-কর্মীদের ধারণা, তাদের মতো আরও বহু নেতা-কর্মী দল থেকে সরে দাঁড়াবেন। তবে এমনটি মনে করেন না পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা পদত্যাগ করছে তাদের কোনো পদ নেই। ফলে তাদের পদত্যাগ দলের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এতে আরো উপস্থিত থাকবেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী এবং মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুসহ ২৩ জেলার জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনীতিবীদরা। নেতার্কমী সম্মেলনে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমর্থকদের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি-কেন তারা পদত্যাগ করছে। আশা করি, এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।