পুলিশের ওপর তিন রাউন্ড গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় কৌশলে দুই থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে তিনজন জেলার আলোচিত হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এ সময় বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার বেলা এগারোটার দিকে বরিশাল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম বিপিএম। গ্রেপ্তারকৃতদের ওইদিন (রোববার ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর আসে শনিবার ভোরে একদল ডাকাত মুলাদীর সীমান্তবর্তী হিজলা উপজেলার গৌরব্দী ইউনিয়নের কানীবগীরচর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘরে অবস্থান করছে। এখবর পেয়ে হিজলা থানার ওসি মোঃ জুবায়ের আহম্মেদের সহযোগিতায় দুই থানার পুলিশ নিয়ে যৌথ অভিযান চালানো হয়।
ওসি মাহবুবুর রহমান আরও জানান, কানীবগীরচর এলাকার রাজের চৌধুরীর পরিত্যক্ত ঘরে অবস্থান করা ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযানের সময় ডাকাত দল পালানোর জন্য পুলিশকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার সময় সাদা পোষাকের পুলিশ ডাকাতদের সাথে মিশে গিয়ে কৌশলে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুইটি পাইপগান, ছয় রাউন্ড গুলি, চারটি ক্রিচ, তিনটি রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মুলাদী উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের চরকমিশনার গ্রামের মৃত আবুল কালাম ওরফে কলম সরদারের ছেলে কামাল সরদার (৪০) ও জামাল সরদার (৩৫), মুজাহার সরদারের ছেলে মানিক সরদার (৪২), ভোলা সদর উপজেলার চরমোনষা গ্রামের বশার মীরের ছেলে আলম মীর (৩৫), একই উপজেলার রামদাসপুর গ্রামের রতন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারী (৩৫), মৃত মালেক সরদারের ছেলে মাসুম সরদার (২৬), কন্দ্রকপুর গ্রামের জহিরুল ইসলাম মাঝির ছেলে মেহেদী হাসান (২২)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কামাল সরদার, জামাল সরদার এবং মানিক সরদার প্রকাশ্য দিবালোকে ইজিবাইক থেকে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা জেলার আলোচিত মুলাদীর চরকমিশনার গ্রামের আবদুর রব হাওলাদার হত্যা মামলার আসামি। এ ছাড়া জুয়েল বেপারীর নামে হিজলা থানায় ডাকাতি মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, রব হাওলাদারকে হত্যার পর প্রধান আসামি কামাল সরদারসহ অন্যান্যরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে। এরমধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কানীবগীরচর থেকে গ্রেপ্তারকৃত সাতজন ডাকাতের মধ্যে হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতির প্রস্তুতি, পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে রোববার সকালে আলোচিত হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে মুলাদীর কাজিরচর ইউনিয়নের শত শত নারী-পুরুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে আসামিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।