নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী (ডিইই)খায়রুল ইসলাম অকারণে একই দপ্তরের এক শ্রমিককে জুতাপেটা করেছেন এমন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এটি জানাজানি হওয়ায় ওই প্রকৌশলীর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকরা। সোমবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়কের (ডিএস) কার্যালয়ের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করে। ওইদিন বেলা সাড়ে ১১ টায় রেলওয়ে কারখানার বিভিন্ন সপ (উপ-কারখানা) থেকে মিছিলসহ বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) এর কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয় শ্রমিকরা। পরে সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় রেলওয়ে শ্রমিকলীগ নেতৃবৃন্দ এসে সাধারণ শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কারখানা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সম্পাদক ছালেহ উদ্দিন ও ওপেন লাইন শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। বক্তারা বলেন, গত শনিবার বিভাগীয় বিদ্যুৎ প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম কোনো কারণ ছাড়াই তার অফিসের মিটার রিডার ফারুক হোসেনকে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এর প্রতিবাদ করায় জুতা খুলে ফারুককে বেদম মারপিট করেন তিনি। তারা অবিলম্বে ওই কর্মকর্তাকে বদলীসহ তাঁর বিচার দাবী করেন। একইসাথে শ্রমিকদের বার্ষিক পোশাক ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দ্রব্যাদি প্রাপ্তি এবং চিকিৎসা ভাতা প্রদানে গাফলতি দূর করে সহজলভ্য ও নির্ধারিত সময়ে দেওয়া নিশ্চিত করার দাবী তুলে ধরেন বক্তারা। পরে রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান সমাবেশে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের দাবীসমূহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে ডিইই খায়রুল ইসলামকে কারখানা থেকে প্রত্যাহার তথা বদলীর এখতিয়ার তার নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা। পরে বিষয়টি রেলওয়ে শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিনের ওপর ন্যস্ত করা হয়। তিনি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও কারখানার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানালে শ্রমিকরা কাজে ফিরে যান। তবে এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার ফারুক হোসেন গণমাধ্যমে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমনকি সংবাদকর্মীদের দেখে সরে পড়েন। বিভাগীয় বিদ্যুৎ প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম বলেন, মিটার রিডার ফারুক তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছেননা। তিনি মিটারের বিল রিডিং এ নয়ছয় করার কারণে আমার রেলওয়ের বাসভবনের বিদ্যুতের বিল প্রতিমাসে অতিরিক্ত আসছে। এনিয়ে ফারুককে জিজ্ঞাসা করায় সে অসদাচরণ করে। তাই আমি তাঁর বিরুদ্ধে চাকুরী বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য সে আমাকে নানা হুমকি ধামকি দেওয়া এবং নিজের অপকর্ম আঁড়াল করতে তাকে মারধরের ভূয়া অভিযোগ তুলে আমাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে।