পাবনার সাঁথিয়ায় কাশিনাথপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সিবলি সাদিক রাশেদ প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিনকে মারধর করার প্রতিবাদে ওই সদস্যের পদত্যাগ ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীবৃন্দ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসলাম উদ্দিন জানান, গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব পদে লোক নিয়োগের বিষয়ে অফিসকক্ষে বিদ্যালয়ের সভাপতি আবদুল বাতেন মিয়াসহ অন্যান্য সদস্যগণকে নিয়ে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনায় বসেন।
এ সময় সদস্য রাশেদ তার নিজের লোককে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের জন্য আমাকে পাবনা ডিজির প্রতিনিধির নিকট যেতে বলেন। আমি বলি সভাপতি মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে বৃহস্পতিবারে যাব। যেহেতু রেজুলেশন লেখা হয় নাই। সেটা লিখে নিয়ে তারপর যাব। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার চোখে প্রচন্ড জোরে ঘুষি মারে। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে চেয়ারের ওপর পড়ে যাই। পরে সহকর্মীরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক অভিযোগে আরও বলেন, এর আগে আমাকে একটি অনৈতিক প্রস্তাব দেন সদস্য রাশেদ। তারা প্রার্থীর নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের লেনদেন করেন যা আমাকেও ভাগ নিতে বলেন। এতে আমি অস্বীকার করলে পরে একজনের মাধ্যম দিয়ে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। আমি এতেও অস্বীকার জানালে সে সভাপতির সামনেই আমাকে অশ্লিল ভাষায় গালাগাল করেন। আমি এর প্রতিবাদ করে সভাপতির নিকট উপস্থাপন করতেই আমার চোখের উপর ঘুষি মারলেন। আমি চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ওই দিন রাতে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এর বিচার চাই।
মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেয় এবং বলে,আমরা আমাদের শিক্ষককে লাঞ্চিত করায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য রাশেদের পদত্যাগ ও শাস্তি চাই। যাদের কারণে আমাদের বিদ্যালয়ের মানসম্মান থাকবেনা এমন অযোগ্য কিমিটির আমাদের দরকার নেই। এমন কমিটি থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। দুইদিনের কমিটি হয়ে ২৬ বছরের শিক্ষকের গায়ে যারা হাত তোলে তাদের যদি বিচার না হয় তাহলে বুঝবো দেশে আইন বলতে কিছু নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা আবদুল কাদের বিশ^াস বলেন, তিনি আমাদের দপ্তরে কোন লিখিতি আবেদন করেননি, আবেদন করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওযা হবে। সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বুধবার (২০সেপ্টেম্বর) মামলা হয়েছে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। এটা ফৌজদারী অপরাধ তিনি সংক্ষুব্ধ তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন।