কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নিকলী উপজেলা। এ উপজেলার ৪ ইউনিয়ন পরিষদে ১৫ শত ১টি অবৈধ জন্ম নিবন্ধনের প্রমাণ পাওয়ায় ৫ ইউডিসি’র (ইউ.পি ডাটা এন্ট্রি বিভাগ) উদ্যোক্তাদের নামে মামলা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে নিকলী থানায় মামলা দায়ের করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির ইয়াকুব আলী মিলন। মামলার আসামিরা হলেন- জারইতলার মনির হোসেন, গুরই ইউনিয়নের ছাদেক মিয়া, ছাতিরচরের আতিকুল ইসলাম, তামিমা আক্তার শিশু ও সিংপুর ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন। জানাযায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহস্যজনক ভাবে তার সহযোগিতায় চেয়ারম্যান ও সচিবরা ওই মামলা থেকে রেহায় পাওয়ার চেষ্টা করছেন। দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে ইউডিসিদের উপর। এমন অভিযোগ উদ্যোক্তা সহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের। ৫ জনের নামে নিকলী থানায় মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জারইতলা, ছাতিরচর ও অন্য ইউডিসিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন কোন ইউডিসি কোথাও অপরাধে দায় স্বীকার করেনি। উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবদের দায় মুক্তি দিতে রহস্যজনক ভাবে গত ৫ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এর অনুলিপি পাঠানো হয় উপপরিচালক স্থানীয় সরকার কিশোরগঞ্জকে। ইউডিসিদের অভিযোগ অনিয়মের অভিযোগে গত ৩১ আগস্ট লিখিত ভাবে সাসপেন্ট করেছে উপজেলা অফিস। এ ঘটনার পর ১২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল কালাম আজাদ ৪ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সচিব ও একজন হিসাব রক্ষককে শোকজ করেছে বলে শুনেছেন। তবে শোকজের জবাব চলমান অবস্থায় কিভাবে ইউডিসিদের নামে মামলা দেওয়া হলো তার রহস্যজনক। মামলায় প্রকৃতপক্ষে অপরাধী চেয়ারম্যান ও সচিবরা। আসামি তারা তাদেরকে ফাঁসাতে সাক্ষী হয়েছেন। জারইতলার সাবেক ইউডিসি বলেন, উদ্যোক্তাদের কাজ হলো শুধু আবেদন করা। আবেদন যে কোন লোক করতে পারে না। তার যাচাই বাছাই করার দায়িত্ব চেয়ারম্যান ও সচিবদের। এ ঘটনায় নিকলী উপজেলা কর্মকর্তা ভূয়া জন্ম নিবন্ধন বাতিলের লক্ষে ৫ সেপ্টেম্বর সভা করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন ৪ ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব ও গরুই ইউনিয়ন পরিষদ হিসাব রক্ষক। সভায় চেয়ারম্যান ও সচিবগণ তাদের বক্তব্যে ইউডিসি’র উদ্যোক্তাদের দায়ী করে পাড় পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর ৯ জনকে পাঠানো জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল কালাম আজাদের শোকজে উল্লেখ করা হয় কথিত নিবন্ধনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা মনগড়া। অধিকাংশই বিলম্বিত জন্ম নিবন্ধন (১৮ বছরের উর্ধ্বে)। এই মর্মে প্রত্যেককে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে ইউএনওর মাধ্যমে জবাব দেওয়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে জানা গেছে। কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ শেখ রাসেল (পিপিএম বার) এর কাছে গত ২০ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করা হলে বলেন নিকলীতে জন্ম নিবন্ধনের অনিয়মের অভিযোগে মামলা হয়েছে কি না। তিনি বলেন মামলা হয়েছে এবং তথ্য দিয়ে সহায়তা করার পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকার কথা জানান। নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শাকিলা পারভীন বলেন কি জবাব দিয়েছেন তা বলা যাবে না। তবে জেলা প্রশাসক বরাবরে জবাবের কপি পাঠিয়েছেন। নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারোয়ার জানান, নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাজির ইয়াকুব আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন বলে উল্লেখ্য করেন।