ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে ডুবতে থাকা চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ আল সাদকে বাঁচাতে নৌকা থেকে নদের ঝাঁপিয়ে পড়া নিখোঁজ রিমি আঞ্জুমানের (৩৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় উপজেলার সদরের বিশ্বরোড এলাকায় আলতাফ গোলন্দাজ ব্রিজ সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে চার ঘন্টাব্যাপী উদ্ধার অভিযানে নিখোঁজের ১৭ ঘন্টা পর লাশটি উদ্ধার করে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও থানা পুলিশ।
নিহত রিমি আঞ্জুমান গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগর হাতল গ্রামের নাজমুল ইসলাম সবুজের স্ত্রী। এই দম্পতির তিন সন্তান আছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকাল ৬ টায় দিকে উপজেলা সদরে ব্রহ্মপুত্র নদে পরিবারসহ ঘুরতে আসা নৌকা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে মা নদের পানিতে ঝাঁপ দেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর পরই গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল থানা পুলিশের সহযোগিতায় ব্রহ্মপুত্র নদের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার আশপাশে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী উদ্ধার অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ মায়ের সন্ধান পায়নি। এ অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে বেশ ¯্রােত ছিলো।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে পাঁচ সদস্যের পরিবারের লোকজন উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের পাঁচুয়া গ্রামের আত্মীয়বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিকেলে দিকে ওই ব্রিজ এলাকায় কাঁশফুল দেখতে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা চড়ে ঘুরতে বেরিয়ে হঠাৎ ছেলে সাদ পানিতে পড়ে যায়। তখন মা তার ছেলেকে বাঁচাতে নদে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। তবে নৌকায় থাকা স্বজনরা নদে পানিতে পড়ে যাওয়া শিশু ছেলেটিকে জীবিত উদ্ধার করেন। পরে উদ্ধারকৃত শিশু সাদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা। সে এখন সুস্থ আছে।
গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা রাম প্রসাদ পাল বলেন, ‘নিখোঁজ মায়ের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীদল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হয়েছে।’
গফরগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শনিবার সকাল ৭ টায় থেকে ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলকে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেন পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
নিহতের পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের আবেদন করলে পুলিশ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেলা ১২টার দিকে থানা থেকে মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়।