সাতক্ষীরার দেবহাটায় অফসিজন তরমুজ চাষ করে অনেক বেকার যুবক, শিক্ষার্থী ও কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন। দেবহাটা উপজেলায় প্রথমবারের মতো এই অফসিজন তরমুজের চাষ করে একদিকে যেমন বেকার ও কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন অন্যদিকে নতুন এই কৃষি পন্য চাষে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ঘেরের জমিতে ভেড়ির পাশে মাচান তৈরি করে এই তরমুজের চাষ করা হচ্ছে। যার কারণে বাড়তি কোন জমিরও প্রয়োজন পড়ছেনা। দেবহাটা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেবহাটা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২টি প্রকল্পে গত ৩ মাস পূর্বে কৃষক ও বেকার যুবকদেরকে বিনামূল্যে অফসিজন তরমুজের বীজ সরবরাহ করা হয়। বীজের সাথে সাথে তরমুজের মাচান তৈরি ও সার প্রদান করাসহ সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৫টি প্রদর্শনীসহ ১০বিঘা জমিতে মোট চারটি জাতের বীজ সেগুলো হলো তৃপ্তি, ব্লাক বেবি, সুগারকুইন ও বাংলালিংক নামের বীজ প্রদান করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১০০ গ্রাম থেকে ১শত ২০ গ্রাম বীজ রোপন করা যায়। এই অফসিজন তরমুজ প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীরাও পড়াশুনার পাশাপাশি তাদের ঘেরের নিজস্ব জমিতে এই তরমুজের চাষে ঝুকছে। এবছর আশানুরূপ ফলন ও লাভজনক হওয়ায় আগামীতে বেশি করে এই তরমুজ চাষে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বলে কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলার ঘলঘলিয়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র রনি ইসলাম বলেন, সে বেকার থাকায় পড়াশুনার পাশাপাশি দেবহাটা কষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ তাকে এই অফসিজন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করে। মোস্তাক আহম্মেদের পরামর্শে সে তার নিজস্ব ১ বিঘা জমিতে অফসিজন তরমুজের চাষ করেছে। রনি জানায়, প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে তার ফলন খুবই ভাল হয়েছে। সে খুব খুশী এবং আগামী বছর আরো বড় করে সে এই চাষ করবে বলে জানিয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, দেবহাটা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তিনি সার্বক্ষনিক কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন। এই অফসিজন তরমুজ চাষের পদ্ধতি ও বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে কৃষকদেরকে অবহিত করেছেন। দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর দেবহাটা উপজেলায় এই তরমুজের আশানুরূপ ফলন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, আগামীতে আরো বৃহৎ আকারে এই তরমুজ চাষে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ানুর রহমান জানান, দেবহাটার ভূমি কৃষি বান্ধব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কৃষিরও পরিবর্তন হচ্ছে।নতুন নতুন এই ধরনের ফসল ফলানোর মাধ্যমেই আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। ইউএনও বলেন, সরকার কৃষকদের কল্যাণেবিভিন্ন প্রকারের উদ্ভাবনীমূলক কাজ করছে। আগামীতে এই এলাকার কৃষকদেরকে এই তরমুজ চাষ আরো বড় আকারে করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।