বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কালিতলা নৌ ঘাটে ভাড়া বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি।বগুড়া জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত এ নৌ - ঘাটে মান্ধাতার আমলের মতোই চলছে সেবা। ভাড়া নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এ নিয়ে কাউন্টারে টিকিট মাস্টারের সাথ বাধছে হর হামেশাই বাক-বিতন্ডা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও যাএী সূত্রে জানাগেছে,বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা-মাদারগঞ্জ নৌ-ঘাট আদিকালের।এ ঘাটে সকাল ১১টায়,দুপুর ২টায় ও বিকেল ৪ টায় যাএী বোঝাই নৌকা ছাড়ে যমুনা নদীর ওপাড়ে। অপরদিকে সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের জামথল মাদারগঞ্জ ঘাটে থেকে আসে সকাল ৯ টা দুপুর ২ টা ও বিকাল ৪ টায় নিয়মিত ভাবে যাতায়াত করে প্রতিদিন। রোদ বৃষ্টি যাই হোক না কেন।বড় রকমের কারণ ছাড়া যাতায়াতে তেমন কোন হের ফের হয় না এ নিয়মের। তবে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত এ নৌ-পথে শ' শ' যাএীর দুর্ভোগের শেষ নেই। যাএীদের জন্য কোনো পাড়েই নেই যাএী ছাউনি।কালিতলা ঘাটে যাএীদের নাম মাএ টয়লেট থাকলেও।জামথল মাদারগঞ্জ ঘাটে তাও নেই।বিশেষ করে মহিলা যাএীদের এ ক্ষেত্রে কষ্টের শেষ থাকেনা। এছাড়াও খোলা নৌকায় যাএী পাড়াপাড় চলছে মান্ধাতার আমল থেকেই। রোদ, ঝড়,বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চলতে যাএীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা একটু ভিন্ন রকমের। মটর সাইকেল সহ অন্যান্য যানবাহন তোলার কোন ব্যবস্হা নেই এই ঘাটে। কয়েক কেজি ওজনের হাতে থাকা মালামালের জন্য ভাড়া গুনতে হয় যাএীদের। যাএীদের এক পাড়ের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয় মাথাপিছু। কোনো যাএী জরুরী ভিওিতে যমুনা নদী পাড় হতে চাইলে মাথাপিছু ৮০ টাকা ভাড়া ইজারদারকে পরিশোধ করার পর অন্য নৌকায় যেতে হয়।
শনিবার সকালে কালিতলা ঘাটে নদী পাড়ের সময় মাদারগঞ্জের গফরগাঁও গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,আমি ৭/৮ কেজি ওজনের মরিচের চারার কার্টুন নিয়েছি। হাতে থাকা এ কার্টুনের জন্য আমাকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে।এত অনিয়ম, দুর্নীতি দুর্ভোগ এই ঘাটে। এত সমস্যা এ ঘাটে কিন্তু দেখার কেউ নাই।
সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের ফজল মিয়া বলেন,এ ঘাটে যাতায়াত করা খুবিই মুশকিল হয়েছে আমাদের। ৩০ কেজি ওজনের আটার বস্তা নিতে আমাকে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। যে ভাবে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, এটা যাএীদের গলা কাঁটার শামিল।
মাদারগঞ্জের বালিজুড়ি এলাকার সুমনা আক্তার বলেন, এই ঘাটে আমরাতো আগেও ৪০ টাকায় পার হয়েছি। ভাড়া এখন এত বেশি কেন? এই গলাকাঁটার ভাড়ার তো কেউ প্রতিবাদ করেন না।
জামালপুরের তেঘরিয়া এলাকার ধীমান বাবু বলেন,আমি ঘাটের নৌকায় যাব না, ঠিক আছে। অন্য নৌকা যেতে আমাকে ঘাটের ভাড়া পরিশোধ করতে হবে কেন? এই ঘাটের শত শত যাত্রী ঘাটের ইজারাদারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ঘাটের ইজারাদার শফিকুল ইসলাম (আকিল)বলেন,ঘাটের ইজারা মুল্য '২১ সালে ছিলো প্রায় ৭৩ লাখ টাকা, '২২ সালে ৯৭ লাখ, বছর সে ঘাটের ডাক হয়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তবুও আমরা ভাড়া বেশি নিচ্ছি না। নিয়ম মেনেই ভাড়া নিচ্ছি। এছাড়াও যাএীদের ছাউনির জন্য বগুড়া জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা এসে এরইমধ্যে মাপ যোক দিয়ে নিয়ে গেছেন।
এব্যাপারে বগুড়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোঃশাহ নেওয়াজ বলেন, আমরা ওই ঘাটের মান্ধাতা আমলের সেবা রাখবো না। সেবার মান উন্নত করতে এরইমধ্যে আমরা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয় আমার জানা নেই। এ অভিযোগের বিষয়টি ঘাটের ইজারাদারকে বলবো।