ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সমাজ সেবক, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মদানকারী জাতীয় বীর, শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন সরকারের সভাপতিত্বে শহীদ ময়েজউদ্দিনের স্মরণসভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু বকর চৌধুরীর সঞ্চালনায় স¥রণ সভায় বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদের কন্যা মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্ল্যাহ মন্ডল।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. আশরাফী মেহেদী হাসান, কালীগঞ্জ উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ, গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. রিনা পারভিন, কাপাসিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমানত, পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ আহমেদ, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবিন হোসেন, সাবেক সদস্য তাছলিমা রহমান লাভলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফ হোসেন খান কনক, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জুয়েনা আহমেদসহ জেলা, মহানগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ ময়েজউদ্দিন ১৯৩০ সালে ১৭ মার্চ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলাধীন মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপির বাবা। শহীদ ময়েজউদ্দিন ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা করার জন্য গঠিত ‘মুজিব তহবিলের’ আহ্বায়ক ছিলেন। একজন বিচক্ষণ আইনজীবী ও রাজনীতিক হিসেবে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে ওই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর-কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ রেডক্রস (বর্তমানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট) সোসাইটির নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। শহীদ ময়েজউদ্দিনের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে ধাপে ধাপে গড়ে উঠা প্রবল গণআন্দোলনে অবশেষে সামরিক শাসক ও শাসনের পতন ঘটে। গণতন্ত্রের জয় হয়। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সব্বোর্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান “স্বাধীনতা পদক”-এ ভূষিত করেন। ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সারাদেশে ২২ দল আহূত হরতালের আহ্বান করে। ওইদিন গাজীপুরের কালীগঞ্জে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মিছিলে শহীদ ময়েজউদ্দিন নেতৃত্ব দেন। ওই সময় কালীগঞ্জ বাজার এলাকায় কতিপয় সন্ত্রাসী তাঁর ওপর হামলা চালালে ঘটনাস্থলেই তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন।