বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে না দিয়ে তিলে তিলে মারবেন এটাই তার অসৎ শয়তানী পরিকল্পনা। শেখ হাসিনা আপনি নিজেই প্রমান আপনি ছিলেন কারাগারে সেখান থেকে স্কয়ার হাসপাতালে এসেছিলেন পরে বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় আপনার সাবেক মন্ত্রী মো. নাছিম ওঁর সাজা হয়েছিল সাজা অবস্থায় তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিল এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে।
তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার বেলায় কেন আপনার তৈরি করা আইন দেখাচ্ছেন। বর্তমান সরকারের লোট-পাটের কারণে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তা সাধারন মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে দাড়িয়েছে। এ সরকার যতই ষড়যন্ত্র করুক, বিএনপিকে ধ্বংশ করতে পারবে না। ইতিহাসের পাতা থেকে জিয়া ও খালেদা জিয়াকে মুছে দিতে পারবেনা। কাপাসিয়ার কৃতিসন্তান আ স ম হান্নান শাহ্ ছিলেন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা ফকির মজনু শাহ্’র বংশধর। তারই পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজের ধমনিতে পূর্ব পুরুষের বীরের রক্ত প্রবাহিত। এ রক্ত মাথানত করতে জানে না। তিনি শনিবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কৃতিসন্তান ও বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আ স ম হান্নান শাহ্’র ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঘাগটিয়া চালা ওয়েলফেয়ার ক্লাব মাঠে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার পরিচালনায়, পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন গাজীপর জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হান্নানশাহর ছোট ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যান সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্য কাজী ছায়েদুল আলম বাবুল, মজিবুর রহমান, ওমর ফারুক শাফিম, গাজীপুর মহানগর সভাপতি শওকত হোসেন সরকার, গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশির কাপাসিয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি ফরিদুল আলম ভুলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী প্রমুখ।
এছাড়া প্রধান অতিথি নেতা-কর্মীদের নিয়ে হান্নান শাহ্’র কবরে ফাতেহা পাঠ এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন। এ উপলক্ষে তাঁর পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে হান্নান শাহ্’র রুহের মাগফিরাত কামনায় তাঁর গ্রামের বাড়ি ঘাগটিয়াতে কোরআনখানি, মিলাদ, দোয়া ও স্মরণ সভা এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের পুস্পস্তবক অপর্ণসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়। হান্নান শাহ্ ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের র্যাফেলস হার্ট সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আ স ম হান্নান শাহ্ ১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শের রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
তাঁর বাবার নাম ফকির আবদুল মান্নান শাহ্। তাঁর বাবা ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। হান্নান শাহ্’র স্ত্রীর নাম নাহিদ হান্নান। তাদের এক মেয়ে শারমিন হান্নান সুমি এবং দুই ছেলে শাহ্ রেজাউল হান্নান রেজা ও শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। তাঁর ছোটভাই শাহ্ আবু নঈম মোমিনুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জেষ্ঠ্য বিচারপতি ছিলেন।
১৯৬২ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পাওয়া হান্নান শাহ্ বিভিন্ন সেনানিবাসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অন্য বাঙালি সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। তিনি পার্বত্য চট্রগ্রামের ব্রিগেড কমান্ডার, চট্রগ্রামের মিলিটারি একাডেমির কমান্ডেন্ট, যশোর স্কুল অব ইনফ্রেন্টি এ- টেকটিক্স এর চিফ ইন্সট্রাক্টর, পাকিস্তানের কোয়েটার আর্মি কলেজ অব ইলেক্ট্রিক্যাল এ- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ইন্সট্রাক্টরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮১ সালে ৩০ মে চট্রগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনাবাহিনীর হাতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে রাঙ্গুনিয়া থেকে প্রেসিডেন্টের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ্। এইচ এম এরশাদ সরকার হান্নান শাহকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। তিনি সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম-সচিব (এপিডি) ছিলেন।
সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর এরশাদ সরকারের সময়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন হান্নান শাহ। ১৯৮৩ সালে ওই পদ ছেড়ে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপিতে যোগ দেন।