রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের একের পর এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার নেপথ্যে নাটের গুরু সহকারী প্রধান শিক্ষক সহিদুজ্জামান। প্রধান শিক্ষককে হটিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হওয়ার খায়েস অনেক দিনের। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিকের সাথে হাত মিলিয়ে নেপথ্যে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ে একের পর এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলে যোগদানের পর থেকেই তার খায়েস তিনি হবেন প্রধান শিক্ষক। দিকে স্কুলের সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগে অনাস্থা এনে কমিটির সদস্য সচিবসহ ছয় সদস্য এক সাথে পদ ত্যাগ করেছেন। এদিকে স্কুলে একের পর এক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে। গত ২৩ অক্টোবর বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন হামলার নেপথ্যে নেতৃত্ব প্রদানকারি হিসেবে সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক সহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর উন্মোচিত হয়েছে। ওই দিন প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসীর ব্যানারে মহাসড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে বহিরাগতরা। বিক্ষোভ শেষে তারা বিদ্যালয় চত্বরে আন্দোলন শুরু করলে দুপক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ ঘটে। ওই সময় বিদ্যালয়ের অফিস রুমে অবস্থান করলে নিরব ভূমিকার ছিলেন সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করিয়ে যেকোন বিনিময়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হতে চান সহকারী প্রধান শিক্ষক সহিদুজ্জামান। এদিনের সংঘর্ষের পরবর্তী সময়ে পুনরায় চক্রান্তের জাল বুনেন তিনি। তারই মদদে আজিজ নামের কথিত অবিভাবক সদস্যকে দিয়ে আদালতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করান। এছাড়াও সহকারি প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি যোগসাজসে উল্টো প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। তাদের এধরণের হীন মানষিকতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি নানা ধরণের জটিলতায় পড়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এদিকে কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সদস্য সচিবসহ ছয় সদস্য পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোর) স্কুলের কমিটি ভেঙে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা বোর্ড, বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর আবেদন করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সভাপতির অপসারণসহ নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১১ সদস্য নিয়ে দুই বছর মেয়াদী বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠিত হয়। পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন মো. রুস্তম আলী প্রামানিক। স্কুলের কমিটি গঠনের পর থেকে সভাপতি বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটাতে থাকেন। এছাড়াও তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির সদস্যদের প্রতিনিয়ত খরাপ আচারণ করেন। এতে করে দিন দিন স্কুলের শিক্ষাকার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত ৪ অক্টোবর স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মো.কিবরিয়া,মো.এনতাজ আলী,মো.আব্দুল হালিম মীর,মোছা. ববিতা আখতার, শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মো.এমদাদুল হক ও মোছা. জান্নাতুল নাইম পদ ত্যাগ করেন। পদ ত্যাগকারি অভিভাবক সদস্য মো. এনতাজ আলীসহ কয়েজন সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের সাথে খারাপ আচারণসহ বিভিন্ন অনিয়ম করায় সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে এক সাথে প্রধান শিক্ষক আমরা ছয় সদস্য পদ ত্যাগ করেছি। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. রুস্তম আলী প্রামানিক বলেন, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.শফিকুল ইসলাম বলেন,গত ৪ অক্টোবর সভাপতির ব্যাপক অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার কারণে কমিটির ১১ সদস্যর মধ্যে আমি সদস্য সচিবসহ কমিটির ছয় সদস্য পদ ত্যাগ করেছেন। এতে কমিটির কার্যকারিতা আর থাকে না এবং কমিটি ভেঙে যায়। বৃহস্পতিবার বোর্ডকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সহিদুজ্জামান বলেন, নিয়মের বাহিরে প্রধান শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে আমার কখনো নেই। স্কুলের বিষয়ে আমাকে অন্যায় ভাবে জড়ানো হচ্ছে।