দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আত্রাই সংলগ্ন নালার উপর নির্মিত কাঠের ব্রীজটি ২০১৭সালের বন্যায় ভেঙ্গে যায়। কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর দীর্ঘ দিন ধরে ব্রীজ মেরামতের দাবি জানিয়ে আসছিল এলাকাবাসী। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও দাবি পুরণ না হওয়ায় এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে শুরু করেছেন বাঁশের সাকো নির্মানের কাজ। এতে কেউ নগদ টাকা, কেউবা নিজের বাগানের বাঁশ, আবার কেউবা শ্রম দিয়ে ব্রীজ নির্মানে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গতকাল বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী কাশিমনগর গ্রামের কাচারীপাড়া আত্রাই নদী সংলগ্ন নালার উপর বাঁশের সাকো নির্মানের অংশগ্রহণ করেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৬সালে ১লক্ষ ৮৪হাজার টাকা ব্যয়ে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে নালাটির উপর একটি কাঠের ব্রীজ নির্মান করা হয়। কিন্তু ২০১৭সালের বন্যায় ব্রীজটি ভেঙ্গে গেলে চরম দুর্ভোগে পড়ে কাশিমনগর গ্রামের কাচারীপাড়ার আনুমানিক ৫০টি পরিবার। এখানে একটি স্থায়ী ব্রীজ মেরামতের দাবী জানিয়ে কোন কাজ হয়নি। তাই শুক্রবার সকালে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় ভাবে বাশেঁ সাকো নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছেন এলাকাবাসী।
সাঁকো নির্মানের উদ্যোক্তা মোঃ মজিদুল ইসলাম জানান, নালার উপর নির্মিত একমাত্র কাঠের ব্রীজটি ২০১৭সালে বন্যায় ভেঙ্গে যায়। এরপর এলাকাবাসী এখানে স্থায়ী ভাবে একটি ব্রীজ নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ব্রীজ নির্মানে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বর্ষাকালে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে মানুষ পারাপার করা হয়। এতে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। গত সপ্তাহে স্থানীয় বাসিন্দা দুদু মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ সোনিয়া তার ৬মাসের শিশু নিয়ে কলাগাছের ভেলায় পারাপারের সময় পানিয়ে পড়ে যায়। উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিক ভাবে তাদের উদ্ধার করলে প্রাণে বেঁচে যান তারা।
একটি ব্রীজ নির্মানের দাবি স্থানীয় বাসিন্দা সাকিল আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘ ধরে নালার উপর একটি ব্রীজের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু ভোটের সময় সবাই কথা দিলেও ভোটের পর আর কারো দেখা মেলে না। এই নালাটি ব্রীজ না থাকায় মানুষ পারাপারসহ কৃষি পন্য নিয়ে চরম ভোগান্তি কাছারি পাড়া এলাকার ৫০টি পরিবারের। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী নিয়ে যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্রীজ না থাকায়। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নালাতে পানির স্রােত বেড়ে গেছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তাই নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে একটি বাঁশের সাকো নির্মান শুরু করেছে।
জানতে চাইলে শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম জানান, যেহেতু আমাদের কালভাট তৈরী করার মতো বাজেট দেওয়া হয় তাই সেখানে ব্রীজ তৈরী করার মতো সামর্থ্য থাকে না। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পরিকল্পনা সভায় উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কশন করে আমি বিষয়টি উপস্থাপন করেছি। আশা করছি চেয়ারম্যান মহোদয়ের মাধ্যমে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।