জাহিদ আর সোমা দীর্ঘ চার বছর প্রেম করে বিয়ে করেছেন। কিন্তু বিয়ের পর মাস না পেরোতেই দুজনের বোঝাপড়ায় সমস্যা হতে শুরু করে। সেই সমস্যা একসময় প্রকট আকার ধারণ করে। চার বছরের সম্পর্ক বিয়ের এক বছরের মধ্যেই বিচ্ছেদে গিয়ে গড়ায়। কেন হয় এমনটা? প্রেম করার জন্য শুধু প্রেমই প্রয়োজন হয়। কিন্তু বিয়ের পর সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রেমের পাশাপাশি আরও অনেক কিছু ছাড় দিতে হয় দুপক্ষকেই। জেনে নিন কেন বিয়ের পর বোঝাপড়ায় সমস্যা শুরু হয়।
হঠাৎ বাস্তবতার হানা
প্রেমের সময়টা কাটে প্রজাপতির ডানায় ভর করে। এ সময় সবকিছুই রঙিন মনে হয়। ভালোবাসার মানুষটির ইতিবাচক দিকটিই কেবল চোখে পড়ে। কিন্তু বিয়ের পর তার মন্দ দিকগুলোও ধীরে ধীরে চোখে পড়তে শুরু করে। কারণ একই ছাদের নিচে থাকার সুবাদে মানুষটিকে আরও গভীরভাবে চেনার সুযোগ হয়। সঙ্গীর মন্দ দিকগুলো অনেকেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেন না। ফলে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে।
স্বাধীনতায় ভাঁটা পড়া
বিয়ের আগে হয়তো বিপরীত লিঙ্গের বন্ধুদের দঙ্গে আড্ডা দেওয়া হতো দেদার। বিয়ের পর অধিকারবোধ বেড়ে যাওয়ায় সঙ্গী ব্যাপারটা ভালোভাবে নিতে পারছে না। এমনটা ঘটতে পারে স্বামী কিংবা স্ত্রী দুজনের সঙ্গেই। এ ক্ষেত্রে স্বাধীনতায় ছেদ পড়ার বিষয়টা অনেকেই ভালোভাবে মেনে নিতে পারেন না।
ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে থাকা
ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে থাকলে নিজেদের মধ্যে মানসিক যোগাযোগ কমতে থাকে। যোগাযোগে ভাঙ্গন ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে সম্পর্কে। একে অপরের কথা শোনা, বোঝার চেষ্টা করা এবং উদ্বেগ ও দ্বন্দ্ব সমাধানের ইচ্ছে থাকা খুব জরুরি। মানসিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সম্পর্ক কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
পারিবারিক কলহ
নতুন পরিবারে মানিয়ে নিতে অনেকেরই সমস্যা হয়। বিশেষ করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতা না পেলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে স্ত্রীর জন্য। এমন অবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে প্রত্যক্ষ ও কার্যকরভাবে সাপোর্ট না দিতে পারে, তবে অনেক সময়ই সম্পর্ক বিচ্ছেদে গিয়ে গড়ায়।
কোয়ালিটি টাইমের অভাব
কাজ, পরিবার ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ধীরে ধীরে নিজেদের অর্থপূর্ণ মুহূর্তগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। নিজেরা কোয়ালিটি টাইম না কাটালে ক্রমশ মানসিক যোগাযোগ কমতে থাকে নিজেদের মধ্যে।
আর্থিক অসঙ্গতি
বিয়ের পর আর্থিক অসঙ্গতি বিরূপ প্রভাব ফেলে সম্পর্কে। হয়তো অন্য কেউ জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে দামি উপহার পাঁচ্ছেন, বিয়ের এমন এমন উপহার কেন পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না এটা ভেবে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকে আবার স্ত্রীর উপার্জন বেশি হলে সেটা নিয়ে ভোগেন অসন্তোষে।