ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক ফয়সাল আহমেদ প্রিন্স হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদন্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। সোমবার বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল হাওলাদার (৩০) বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সালাম হাওলাদারের ছেলে। এ ছাড়া যাবজ্জীবন দন্ডিতরা হলেন-একই গ্রামের আবদুল মজিদ বয়াতীর ছেলে বেল্লাল হোসেন (৩৩), মৃত রুহুল আমিন বয়াতীর ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) ও সানু হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৩০)। পাশাপাশি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় একই গ্রামের আবদুল লতিফ মৃধার ছেলে সৈয়দ মৃধাকে (৩০) খালাস দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে নিহত ফয়সাল আহমেদ প্রিন্স বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার খয়রাবাদ গ্রামের নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।
পিপি সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু জানিয়েছেন, দন্ডিতরা ২০১৯ সালের ৪ মার্চ উপজেলার বালিগ্রামে শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে আসে। পরেরদিন ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বালিগ্রামের সড়কে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক ফয়সালকে একা পেয়ে তার পথরোধ করে নলকূপ স্থাপনের পাইপ বসানোর লোহার হ্যান্ডেল ও রড দিয়ে মাথায় এবং মুখে আঘাত করে। এরপর গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের ইউসুফ হাওলাদারের দোকানের পেছনে মরদেহ লুকিয়ে রাখে। পরে ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে লুট করা মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটরসাইকেলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি হয়। শহিদুল নামে একজন এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে পায়। পরে মোটরসাইকেল দেখতে পেয়ে ফয়সালের বাবা বাদী নুরুল ইসলামকে খবর দেয়। পরে তাদের চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দিলে তারা ফয়সালকে হত্যা করে মরদেহ লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। পরে আটককৃতদের পুলিশের কাছে সোর্পদ করার পর ৬ মার্চ সকালে আসামিদের দেখানো স্থান থেকে ফয়সালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ফয়সালের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নামধারী পাঁচ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।