দেশে দিন দিন মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমান দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৩৬ লাখ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক, অর্থাৎ ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩০০। আর ৭ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৫৬ হাজারের কিছু এর বেশি। মাদক গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৬০ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ২৫ শতাংশ অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকে। ধূমপান, গুল, অন্যান্য উপায়ে তামাকপাতা গ্রহণকারী সাত বছরের ঊর্ধ্বে মোট জনসংখ্যা ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এখন প্রশ্ন হলো মাদকাসক্ত বাড়ার কারণ কি ? মাদকাসক্তের প্রধান কারণ হলো বেকারত্ব, দরিদ্রতা, মানসিকতা। এই সমস্যাগুলোর জন্যই দেশে তরুণরা মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পরছে। বেকারত্ব একটি পরিবারে বড় সমস্যা, একজন ব্যক্তি যখন বেকারত্বের জন্য পরিবারের তাদের চাহিদা পূরণ করতে না পারে তখনই সেই ব্যক্তির মানসিকতার ঠিক ভাবে কাজ করে না, তখনই সেই ব্যক্তি মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকাসক্তের আরো একটি কারণ হলো পরিবার, বাবা মায়ের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেকে মাদক গ্রহণ করে থাকে। অর্থাৎ একটি পরিবার যখন অসচেতনতা থাকে, পিতামাতার তাদের সন্তানের প্রতি শিক্ষায় ঘাটতি রাখে ছেলেকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা না করে, ছেলের প্রতি কোনো দায়িত্ব পালন না করে তাদের ছেলে কাদের সাথে চলাফেরা ওঠা বসা করে এটা সকল বাবা মায়ের খেয়াল রাখা উচিত। বাবা মায়ই পারে তাদের সন্তানকে মাদকাসক্ত থেকে দুরে রাখতে। দরিদ্রতার ফলেও মাদকাসক্তে আসক্ত হয়ে পড়ছে অনেক যুবক। অনেকের মাঝে মাদক নিয়ে স্মার্ট হওয়ার প্রবণতা থাকে যা তাকে ঠেলে দেয় মাদকের জগতে। তাই পরিবার সচেতন থাকলেই মাদকাসক্ত রোধ করা যাবে। মাদকাসক্ত রোধ করতে পরিবারকে মাদকাসক্ত ব্যক্তির পাশে থাকতে হবে, পরিবারকে ধৈর্য রাখতে হবে। কারণ আসক্ত ব্যক্তি অনাকাঙ্খিত আচরণ করতে পারে। তাছাড়া মাদকাসক্ত ব্যক্তিরও মাদক ছাড়ার ইচ্ছে থাকতে হবে। ব্যক্তিগত উদ্যেগ না থাকলে মাদক থেকে নিরাময় সহজ হবে না। তাই বিশেষ করে পরিবারকে সচেতন থাকতে হবে। কারণ প্রত্যেক শিশুর ছোটবেলা থেকে সামাজিকীরন শুরু হয় পরিবার থেকে, আর যারা এই মাদকের ব্যবসা করছে তাদেরকে সরকারের আওতায় আনা দরকার, তা না হলে সামনে বড় বিপদ ঘনিয়ে আসবে আর সরকার সেটা নিশ্চই চায় না।