নওগাঁর মান্দায় উন্মুক্ত চককসবা বিল থেকে জেলেদের কয়েকটি জাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবুর ক্যাডার বাহিনির বিরুদ্ধে। সোমবার রাত ১০টার দিকে বিলে ধাওয়া দিয়ে জেলেদের জালগুলো লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর গভীর রাতে চককসবা মোড়ে কে বা কারা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনায় এলাকার জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জেলেদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান বাবু নিজে উপস্থিত থেকে তার ক্যাডার বাহিনি দিয়ে জালগুলো লুট করে নিয়ে গেছেন। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে তার দায় জেলেদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে চেয়ারম্যান বাবুর ক্যাডার বাহিনি। জের ধরে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দহপাড়া মোড়ে চেয়ারম্যান বাবুর ক্যাডার বাহিনির মারধরে চার জেলে আহত হন। আহতরা হলেন চককসবা গ্রামের সাহেব আলী মোল্লা (৫৫), লিটন প্রামানিক (৪০), পলাশ কারিগর (১৮) ও আবদুস সালাম (৪৫)। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। চককসবা গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, গ্রামের ১০-১২জন জেলে মাছ ধরার জন্য সোমবার সন্ধ্যা রাতে নৌকা নিয়ে বিলে যান। সংবাদ পেয়ে কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনির ২০-২৫জন সদস্য দেশিয় অস্ত্র নিয়ে রাত ৯টার দিকে চককসবা মোড়ে আসেন। এ সময় তারা সেখানে প্রকাশ্যে মদপান করে নৌকা নিয়ে বিলে নেমে জেলেদের ধাওয়া দিলে জাল ফেলে পালিয়ে যান জেলেরা। এ সময় চেয়ারম্যান বাবুর ক্যাডার বাহিনি বিল থেকে জেলেদের জাল লুট করে নিয়ে যায়। একই গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদ বলেন, চেয়ারম্যান বাবুর ক্যাডার বাহিনির হুমকির মুখে জেলেরা মাছ না ধরে বাড়ি-বাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে চককসবা মোড়ে একটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে হইচই শুরু করে বাবুর ক্যাডার বাহিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, জের ধরে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যান বাবুর চিহ্নিত ক্যাডার হাফেজ উদ্দিন, দুলাল হোসেন, আরিফ হোসেনসহ ৭-৮জন বখাটে সন্ত্রাসী কায়দায় সাহেব আলী, লিটন প্রামাণিক, পলাশ কারিগর ও আবদুস সালামকে মারধর করে। এ সময় চেয়ারম্যান বাবু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবুর মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আহতদের উদ্ধারসহ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাল লুট ও মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির মুন্সী বলেন, চককসবা একটি উন্মুক্ত বিল। বিলটি নিয়ে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। ইউএনওর সভা কক্ষে বসে সেটি নিরসন করে দেওয়া হয়েছে। উন্মুক্ত বিলে জেলেদের মাছ শিকারে বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।