দ্বীপজেলা ভোলার মনপুরা উপজেলা তিন মাস ধরে বিদ্যুিবহীন হয়ে আছে। বর্তমান সরকার সারা দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দিলেও ভোলার মনপুরা উপজেলায় বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত লক্ষাধিক মানুষ। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে এর প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য, গৃহস্থালি, শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষার্থীদের। বিদ্যুৎ না থাকায় সরকারি কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। মুজিববর্ষে ন্যায্যমূল্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও তার বাস্তবায়ন এখনো দেখা যায়নি। বরং স্থানীয় গ্রাহকরা জানায়, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন রাতের বেলায় দৈনিক ৬ ঘণ্টা বিদ্যুত দিয়ে আসছে। এর কারণ খুজতে গেলে জানা যায়, চলতি বছরের গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় এক হাজার কেভি (এক মেগাওয়াট) উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনটি ব্লাস্ট হয়ে সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়। গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। বিকল্প হিসেবে ৬৫০ কেভিএ একটি ও ৫০০ কেভিএ দুইটিসহ তিনটি পুরনো মেশিন চালু করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। এ তিনটি পুরনো মেশিনের মধ্যে ২টি মেশিন অতিরিক্ত লোডের কারণে বিকল হয়ে যায়। বর্তমানে একটি মেশিন চালু করে কোনোমতে উপজেলার প্রধান হাজিরহাট বাজারে ভাগ ভাগ করে দৈনিক ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। যার ফলে এলাকা এখন পুরো অন্ধকার। কখনও কখনও কোনো এলাকা দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ পায় অন্য এলাকাগুলো অন্ধকারে থাকে। অথচ যেখানে একটি উপজেলার উন্নয়ন অনেকাংশে বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে। বিদ্যুৎ না থাকলে উন্নয়ন চোখে পড়ে না। বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণ এবং সরকারি কার্যক্রম চালাতেও বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। বিদ্যুতের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবাও। এ ছাড়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে সোলার মিনি গ্রিডের বিদ্যুৎ রয়েছে। ইউনিটপ্রতি ৩০ টাকা এবং ৭০ টাকা সার্ভিস চার্জ দিয়ে ৪ হাজার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ। সেই সোলার মিনি গ্রিডের উৎপাদিত বিদ্যুৎও ঠিকমতো পাঁচ্ছে না গ্রাহক। অথচ প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়। ফলে সবার একটাই দাবি-জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ। তাই সরকারের কাছে আহ্বান করছি, দ্রুত বিদ্যুতের এই অবস্থার পরিবর্তন করা হোক। আশা করবো, খুব দ্রুত বিদ্যুতের এ সমস্যার সমাধান করা হবে।