পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা উপজেলা সংলগ্ন ধানসাগর ষ্টেশন এলাকার বনে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মানুষ খেকো হিং¯্র বাঘে একজন জেলেসহ দুইটি মহিষ খেয়ে ফেলেছে। বনবিভাগের উদাসীনতার কারণে বনের মধ্যে অবাধে মানুষজনের অনুপ্রবেশ ও গবাদিপশু বিচরণ করায় বাঘের এই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে অনেকই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে ধানসাগর স্টেশনের মুর্তির খাল এলাকায় বাঘের আক্রমণে একটি মহিষ মারা যায়। মহিষটির মালিক শরণখোলা উপজেলার বনসংলগ্ন পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের শামছু হাওলাদার বলে জানা গেছে। ঘাস খাওয়ার জন্য মহিষটি সুন্দরবনে গেলে বাঘে মহিষটিকে আক্রমণ করে অর্ধেক অংশ খেয়ে ফেলে। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা খালে অবৈধভাবে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যান পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের জেলে মোঃ শিপার হাওলাদার (২২)। বাঘ শিপারকে পুরোপুরি খেয়ে ফেলায় তার মাথাটি বন থেকে উদ্ধার করা হয়। এর ২০ দিন আগে একই গ্রামের সোবাহান পহলানের একটি মহিষ বনে ঘাস খাওয়ার সময় বাঘের আক্রমণে মারা যায় বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।
১নং ধানসাগর ইউপি সদস্য ও পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, বনসংলগ্ন গ্রামে বসবাসকারী সামছু হাওলাদারের ৮টি, জাহাঙ্গীর তালুকদারের ৪টি, মুসা হাওলাদারের ৬টি এবং সোবাহান পহলানের ১০টি মহিষ রয়েছে। এরা প্রতিদিন তাদের মহিষ বনে ঘাস খাওয়াতে পাঠান। তাদেরকে নিষেধ করলেও শোনেন না। তাছাড়া বনবিভাগের উদাসীনতার কারণে বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ কাজটি করছেন তারা।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বাঘের আক্রমণে নিহত জেলের মৃত্যুর ঘটনার পরে অবৈধভাবে বনে অনুপ্রবেশ এবং গবাধি পশু বনে না পাঠানোর জন্য বনসংলগ্ন বাড়ি সমূহে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।