বর্তমান সরকারের কৃষিক্ষেত্রে গৃহীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে কৃষির প্রত্যেকটি খাতে ধনাত্মক পরিবর্তন দেখা গেছে। ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রত্যেকটি খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হওয়ায় এখন এ দেশের কৃষক কেবল খাদ্য নিরাপত্তা নয় বরং পুষ্টি নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে দেশ ক্রমে এগোচ্ছে। তবে এবারের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সারাদেশে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় দুই লাখ হেক্টরের বেশি আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এর ফলে আমনে উৎপাদন লক্ষমাত্রা অর্জনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়তে পারে। এ ছাড়া নষ্ট হয়েছে চাষিদের নানান জাতের সবজির ক্ষেত। অনেক জেলায় মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। এসব খামারে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল। এবার দেশে এক অদ্ভূত বর্ষা অতিবাহিত হয়েছে। আষাঢ়-শ্রাবণ গেছে অনাবৃষ্টিতে। এরপর ভাদ্র এবং আশ্বিণের শুরুতে অনেকটা স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমন এবং সবচি চাষিরা বেশ আশাবাদী হয়েছিলেন। তবে বিদায় বেলায় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত কয়েকদিনের অতি বৃষ্টিতে তাদের আশা দীফ নিভে গেছে। চাষিরা জানান, আশ্বিন মাসে অত বৃষ্টি তারা আগে কখনও দেখেননি। মূলত আশ্বিন-কার্তিক মাসে বৃষ্টি হলেও তখন ফসলের ততটা ক্ষতি হয় না। কিন্তু এ বার ভারি বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষেতে জল জমে গিয়েছে। ওই জল সরতে বেশ সময় লেগে যাবে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে নীচু জমিতে। এতে কৃষকদের দিন কাটছে চরম হতাশায়। এবার শীতকালীন আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, ওলকপি, গাজর, লেটুস, পালংশাক, ব্রকলি, শালগম, টমেটো, মুলা, ঢ্যাঁড়স, লাউ ও বেগুন জাতের বিভিন্ন শীতকালীন আগাম ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ বছর বর্ষা মৌসুমে খরার কবলে পড়েছিল সারা দেশ। যে কারণে সবজি উৎপাদন কম হয়েছে। মরিচের উৎপাদন হয়েছে অর্ধেকের কম। ফলে কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা ছুঁয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়েছে। শরতে সারা দেশে যখন শীতের পদধ্বনি শোনার কথা তখন টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে মাঠঘাট। কৃষকের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তাই টানা বৃষ্টি ও বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারকে করতে হবে সর্বাত্মক সহায়তা। কেননা কৃষকদেরও তোহ বাঁচাতে হবে।