সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। সড়ক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকার কারণেই প্রয়োগ থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। দুর্ঘটনা বাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনা দেশে এক গুরুতর জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। আর এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে দেশের অদক্ষ ও ভুয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, জনগণের অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, অপরিকল্পিত গতিরোধক, সড়ক নির্মাণে ত্রুটি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়াই প্রধানত দায়ী। অথচ দুর্ঘটনা-পরবর্তী আশু কিছু পদক্ষেপ ছাড়া চিহ্নিত কারণগুলো নিরসনে পরিকল্পিত ও ফলপ্রসূ তেমন উদ্যোগ নেই। তবে এ ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শৈথিল্যের অবসান জরুরি। দেশে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করার প্রতিষ্ঠান অনেক। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থা এ ক্ষেত্রে নিয়োজিত। অথচ পারস্পরিক সমন্বয়হীনতার কারণে এ ক্ষেত্রে সুফল মিলছে না। এ ধরনের সমন্বয়হীনতা দ্রুত দূর করা দরকার। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রণীত হয়েছে। কিন্তু আইনটির বেশির ভাগ ধারার প্রয়োগ এখনো শুরু হয়নি। বলতে গেলে আইন প্রয়োগের শিথিলতা, সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা, চালক-মালিকদের বেপরোয়া মনোভাব পুরো সড়ক ব্যবস্থাকে দিন দিন অনিরাপদ করে তুলছে। এর সুষ্ঠু বিহিত এখন সময়ের দাবি। সত্য যে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সরকারের সদিচ্ছার ঘাটতি নেই। প্রধানমন্ত্রীও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নানা নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। দেশে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এখন সুপারিশ ও নির্দেশনা বাস্তবায়নের সময় এসেছে। তাই শুধু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নয়, সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রেও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভেবে দেখা উচিত। নিরাপদ সড়ক তৈরির জন্য সুপরিকল্পিত নকশা এবং এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কাজ করাটা জরুরি। মহাসড়কগুলোয় ফিডার রোড দিয়ে কম গতির গাড়ি, মোটরবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা দরকার, যাতে দুর্ঘটনা হ্রাস পায়। আর মহাসড়কের পাশে থাকা বাজার, মানুষজন রাস্তা পারাপার হয়-এমন স্থানগুলোয় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে সড়ক-মহাসড়কে বাড়াতে হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি। আশা করবো, কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই গুরুত্বসহকারে বিষয়টি ভেবে দেখবে।