নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহনসহ শিক্ষকদের বিনা কারণে হয়রানী ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে উপজেলায় মোট ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজন ভিত্তিক খেলার আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য দেড় লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের অর্থ লোপাট করতে শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে নি¤œমানের মালপত্র ক্রয় করান। যাতে ৭০ হাজার টাকার বেশি ব্যয় করা হয়নি। শিক্ষা কমিটির সভায় পরিকল্পনা ও বিল-ভাউচার উপস্থাপন না করে নিজেই বিল প্রদান করে বরাদ্দের মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেন এবং ভুয়া বিল ভাউচারে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়াও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রতি বরাদ্দের জন্য ১৫-২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিষ্ঠান থেকে কন্টাক্টের মাধ্যমে প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য ৭০ হাজার টাকার উপকরন ক্রয় করে বিল-ভাউচারে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগি শিক্ষকরা বলেন, ঘুষ গ্রহনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর নানা হয়রানি করেন তিনি। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও মেরামতের বরাদ্দ হতে ২০ থেকে ২৫ ভাগ ঘুষ নেয়া, ঘুষ না দিলে বরাদ্দের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এর আগে (গত ২৪ আগস্ট ২০২২ইং) প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল ও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রাথমিক অনুসন্ধানে বিষয়টি প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। এতে ওই কর্মকর্তার শুনানী সন্তোষজনক না হওয়ায় জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় (গত ২৬ জুন ২০২৩ইং) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ্ রেজওয়ান হায়াতের স্বাক্ষরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদকে দুই বছরের জন্য বেতন গ্রেড দুইধাপ কমিয়ে দেয়া হয়। এবং আদেশে বলা হয় ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অসদাচরন ও দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায তাকে বিধিমালা অনুযায়ী বর্তমান বেতন গ্রেডের দুই ধাপ নিচে অবনমিতকরন দন্ড দেয়া হয়েছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন বলেন, তার বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক আদেশ জারি করা হয়েছে। বর্তমান অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।