ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে এমবিএ পাশ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে সবাইকে চমকিয়ে দিয়েছেন জেসমিন খাতুন। তিনি বানিজ্যিক ভিত্তিতে গরুর খামারী করেছেন। স্বামীর গচ্ছিত ৩ লাখ টাকা আর শ্বশুর বাড়ির ৮ গরু দিয়ে খামার শুরু করেন জেসমিন। সংসার সামলে গরু পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। জেসমিন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ছোট ঘিঘাটি গ্রামের ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী। ছোট ঘিঘাটি গ্রামেই গড়ে তুলেছেন ফাতেমা এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম নামে একটি গরুর খামার। জেসমিন খাতুন জানান, ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। স্বামী সরকারি চাকরি করেন। একটি কন্য াসন্তান আছে তাদের। ২০০৯ সালে উত্তর নারায়ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১১ সালে আবদুর রউফ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেন। ২০১৮ সালে বাড়িতে বসে কিছু একটা করবেন ভাবছিলেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন গরুর খামার গড়বেন। স্বামীর গচ্ছিত ৩ লাখ টাকা দিয়ে ৪টি ও বাড়ির ৮টি গরু দিয়ে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ফার্মটিতে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির ৬০টি গরু আছে। এর মধ্যে ৪০টি কুরবানি ঈদে বিক্রি করবেন। বাকি গুলো থেকে দুধ সংগ্রহ করেন। এখন ফার্মটিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার গরু আছে। তিনি বলেন, এর আগে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ লিটার দুধ সংগ্রহ করতেন। এখন ৯০ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা আয় করেন তিনি। তার এই ফার্মে বর্তমানে ৭ জন কাজ করেন। গরুর খাবার হিসেবে নিজের জমিতে লাগানো নেপিয়ার ঘাস, ভুট্টা, ধানের কুড়া, বিচলি, খইল, ভুসি ব্যবহার করেন। কিন্তু তিনি কোনো মোটা তাজাকরণের ওষুধ ব্যবহার করেন না। ফার্মের কাজে স্বামী-শ্বশুরসহ অনেকেই সহযোগিতা করেন। তিনি প্রতিদিন ফার্মে এসে সব কিছু দেখাশোনা করেন। জেসমিন খাতুনের স্বামী ফরহাদ হোসেন জানান, স্ত্রীকে তিনি ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন গরুর খামার করার জন্য। এরপর থেকে আর আর্থিক সহযোগিতা করা হয়নি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তার স্ত্রী এই ফার্মটি গড়ে তুলেছেন। চাকরি করার কারণে তেমন একটা সময় দিতে না পারলেও ছুটির দিন গুলোতে সহযোগিতা করি। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)ডা. মামুন খান জানান, উপজেলার ছোট ঘিঘাটি গ্রামে একটি গরুর ফার্ম আছে। তবে তিনি ফার্মটি পরিদর্শন করতে পারেননি। ফার্মের মালিক গরু পালনে যে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রানি সম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।