নওগাঁর মহাদেবপুরের হাটে বাজারে আগাম শিম উঠেছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি। উপজেলা সদরের বাজারে মওসুমের প্রথম শিম উঠে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর)। এ সময় এক পোয়া (আড়ইশ’ গ্রাম) শিমের দাম হাঁকা হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। মওসুমের শুরুতে ক্রেতারা বেশি দামে হলেও শিম কিনেছেন। দোকানীরা যা দাম চেয়েছেন তা দিয়েই কিনেছেন তারা। উপজেলা সদরের কাঁচা বাজারের সব্জি বিক্রেতা সাইদার রহমান জানান, তিনি এদিন পাইকারি বাজার থেকে দুশ’ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি শিম কিনেছেন। বিক্রি করেছেন ষাট টাকা পোয়া অর্থাৎ ২৪০ টাকা কেজি দরে। নতুন সব্জি হিসেবে নিমেষেই এই পাঁচ কেজি শিম বিক্রি হয়েছে। উপজেলা সদরের অদূরে নাটশাল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ জুড়ে আগাম শিমের চাষ করেছেন চাষিরা। শিমের মাচানে থরে থরে শোভা পাচ্ছে বেগুনি ফুল। শিমও ধরেছে প্রচুর। নিজের বাড়ি সংলগ্ন শিমের মাচান থেকে শিম তুলছিলেন ওইগ্রামের চাষি আতোয়ার রহমান। তিনি জানালেন, তার ১৫ কাঠা জমিতে এবার আগাম জাতের শিম লাগিয়েছেন মাত্র দুমাস আগে। এই দুমাসেই শিম ধরেছে। শিম চাষে প্রচুর কষ্ট করতে হয়। গত শ্রাবন মাসের শুরুতে বিজ বপণ করেছেন। বিজ থেকে চারাগাছ তুলে লাগিয়েছেন ভাদ্র মাসে। সেখানে মাচান তৈরি করতে হয়েছে যতœসহকারে। শিমের লতানো গাছ মাচানে ছড়িয়ে পড়লে দুবার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে। এক ধরনের পোকা শিমের ফুল খেয়ে ফেলে। ফলে শিম নষ্ট হয়। এসব পরিচর্যার পর এই কার্তিকের শুরু থেকে শিম তোলা শুরু হয়েছে। আগামী চার মাস এ থেকে শিম উঠবে। এখন বাজারে আগাম শিমের চাহিদা আর দাম দুটোই বেশি। পাইকাররা খেত থেকেই দুশ’ টাকা কেজি দরে শিম কিনে নিয়ে যান। এই খেতে তার মোট সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকার শিম বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জানান, এবার এই উপজেলায় ৮৫ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ করা হয়েছে। মওসুমের শুরু থেকেই এবার আবহাওয়া শিম চাষের অনুকুলে ছিল। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সবরকম সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যাতে করে আগামীতে শিমের চাষ বাড়ে সে লক্ষে কাজ করেছেন তারা। ফলে এবার শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টরপ্রতি এবার ১০ হাজার ১৪০ মেট্রিক টন শিম উদপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুরু থেকেই এবার চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে এখন প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায়। ভরা মওসুমে এর দাম ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় নামতে পারে। এই হিসেবে এই উপজেলায় এবার কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার শিম বিক্রি হবে।