স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর নোয়াখালী জেলার পকেট কমিটি বাতিল ও নির্বাচনের মাধ্যমে পুনঃরায় কমিটি দেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। একইসাথে ঘোষিত বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি দ্রুত সমেয়ের মধ্যে বাতিল না করলে আরও কঠোর কর্মসূচীর ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী চিকিৎসক’সহ চিকিৎসা কাজে জড়িত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ২৫০শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সামনে জেলার সর্বস্তরের চিকিৎসকবৃন্দ এবং জেলা স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নোয়াখালীর সভাপতি ডা. এম এ নোমান, ডা. ফজলে এলাহী খান, ডা. মাহবুবুর রহমান, স্বাচিপ বিএমএর সহ-সভাপতি ডা. নূর মোহাম্মদ, ডা. আবু নাছের, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম, ডা. ইসমত আরা পারভিন’সহ সম্মিলিত চিকিৎসক পরিষদ নোয়াখালী, আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ও জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতালের শিক্ষক সমিতি, সার্জন অ্যাসোসিয়েশন নোয়াখালী সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ। বক্তারা বলেন, চলতি মাসের ১৮তারিখ স্বাচিপ নোয়াখালী শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটির একটি তালিকা নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করেন বির্তকিত ও জেলার চিকিৎসক সমাজের কাছে অবাঞ্ছিত হওয়া ডা. আবদুস ছাত্তার ফরায়েজী। পোস্টকৃত ওই তালিকায় তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে নারী নির্যাতন মামলায় কারা ভোগ করা একজনকে। তাই জেলার চিকিৎসকরা মনে করেন এ পকেট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে স্বাচিপ কেন্দ্রীয় পরিষদ জেলার চিকিৎসকদের আবেগ, ইজ্জত ও নিরাপত্তাকে উপহাস করেছে। এ কমিটি বহাল থাকলে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা, অন্যথায় লাগাতার কর্মবিরতী’সহ আরও কঠোর আন্দোলনে নামবেন তারা। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত স্বাচিপের সদস্য সচিব থাকাকালে ফরায়েজী বেপরোয়া চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী কর্তৃক বিভিন্ন জনকে হয়রানি, চিকিৎসকদের বাসা-বাড়ি-চেম্বারে হামলা, ভাঙচুরের মতো জঘন্য কাজ করেছেন। ২০১৫ সালের ১৮ মে আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলাকালে তিনি শিক্ষকদের ওপর বহিরগত সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালায় ফরায়েজী। পরে এ ঘটনায় শিক্ষক-ছাত্রছাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে অবরূদ্ধ হয় ডা. ফরায়েজী এবং কখনও ওই প্রতিষ্ঠানে যাবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে আসেন। ২০১৫ সালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকেও নাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। তাই এদের মতো লোকজন চিকিৎসকদের নেতৃত্বে আসলে চিকিৎসক সমাজ মানুষের কাছে হাসির পাত্র হবে। তাই বড় ধরনের কোনো ঘটনা হওয়ার আগে বির্তবিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে স্বাচিপের সংগঠনকে মূল আদর্শে আনার আহবান সর্বস্তরের চিকিৎসকদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. আবদুস ছাত্তার ফারায়েজী বলেন, গত ১৮ অক্টোবর স্বাচিপের কেন্দ্রী কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরী এবং মহা-সচিব অধ্যাপক কামরুল হাসান মিলন স্বাক্ষরিত পত্রে নোয়াখালীর একটি আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ মাত্র কয়েক মাস থাকে, তা হইতো তিন মাস হবে আমি নিশ্চিত না। আর এটিতো স্থায়ী কোনো কমিটি না। নির্দিষ্ট সময় পর কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নির্বাচন, সম্মেলন বা নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে কার্যকরি কমিটি করা হবে। তখন যে কারো সুযোগ থাকবে কমিটিতে আসার। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আসলে একটি পক্ষ আমার এবং আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে।