জাতীয় মাছ ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মেঘনা নদীতে ২২ দিন সব ধরনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকার পর আজ (বৃহস্পতিবার মধ্যরাত) থেকে শুরু হচ্ছে মাছ ধরা। ইলিশ মাছের প্রজনন অবাধ করার লক্ষ্যে গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। এ সময় সারা দেশে ইলিশ আহরন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিনিময় এবং মওজুদও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
২২ দিন বন্ধ থাকার পর মাছঘাটগুলাতে বেড়েছে জেলেদের কর্মব্যস্ততা। মাছ ধরতে নৌকা ও জাল নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন উপজেলার প্রায় ১৮ হাজার জেলে। রাত ১২টা বাজলেই নদীতে নেমে পড়বেন মাছ শিকারে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে মাছ শিকারের জন্য জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতদিন ঘাটে বেঁধে রাখা নৌকাগুলো মেরামত করছেন জেলেরা। আবার কেউ কেউ জাল ও নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিটি ঘাটেই নদীতে নামার জন্য জেলেদের প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে আড়তদাররাও তাদের আড়তগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘ ২২ দিন বেকার সময় কাটিয়ে নতুন উদ্যমে ইলিশ শিকার ও বিক্রিতে মেতে উঠবেন তারা। জেলেগণ জানান, ২২ দিন সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নদীতে মাছ শিকারে যাননি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ, তাই তারা নৌকা মেরামত করছেন। আজ রাত ১২টা বাজলেই নদীতে মাছ শিকারে যাবেন তারা।
মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপজেলা টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, ‘মা-ইলিশ রক্ষায় উপজেলা টাস্কফোর্স ২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৭৯টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। মৎস্য আইনে নিয়মিত মামলা হয়েছে ৮টি ও ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮ জন জেলেকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার মিটার জাল আটক করা হয়। এ ছাড়া অভিযানে ২টি নৌকা ও ৮৮ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়।
ইলিশের এ প্রজনন সময়ে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় চলতি অর্থবছরে জেলেদের ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এ সহায়তা কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ১৭ হাজার জেলে পরিবারের মধ্যে ২৫ কেজি করে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে