বর্ষা শেষে এবং শীতের শুরুতে পাবনার সুজানগরে শুঁটকি মাছ উৎপাদনের ধুম পড়েছে। কম খরছে লাভ বেশি হওয়ায় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি সাধারণ মৎস্যজীবীরাও শুঁটকি মাছ উৎপাদনে ঝুঁকছেন। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার দুলাই, আহম্মদপুর, রানীনগর ও হাটখালী ইউনিয়ন এলাকায় অর্ধশত শুঁটকি চাতালে রয়েছে। এ বছর ওই সকল চাতালে শুঁটকি মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২২হাজার মণ। ইতোমধ্যে উপজেলার মৎস্যজীবীরা তাদের বাড়ির আশপাশে আবার কেউবা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলের পাড়ে বড় বড় বাঁশের চাতাল তৈরী করে শুঁটকি মাছ উৎপাদন শুরু করেছেন। উপজেলার মসজিদপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী আবদুল করিম বলেন, ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিলসহ আশপাশের ৪/৫টি বিল থেকে পুঁটি, টেংরা, বান, শোল, টাকি, এবং চাঁদা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছ কিনে এনে ওই সকল চাতালে শুকানো হচ্ছে। বিশেষ করে মসজিদপাড়া এলাকার চাতালে সব চেয়ে বেশি মাছ শুঁটকি করা হয়। একই এলাকার মৎস্যজীবী নিজাম উদ্দিন বলেন আমরা কোন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর উপায়ে শুঁটকি মাছ উৎপাদন করি। সেকারণে দেশ এবং দেশের বাইরে সুজানগরের শুঁটকি মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে দেশের বৃহৎ শুঁটকির আড়ত সৈয়দপুরে সুজানগরের শুঁটকি মাছের চাহিদা বেশি। স্থানীয় মৎস্যজীবী মিঠু বলেন উপজেলার বিভিন্ন চাতালে মাছ শুঁটকি করা হলেও এখনও বেচাকেনা শুরু হয়নি। আর ১০/১৫দিনের মধ্যে সৈয়দপুরসহ দেশের অন্যান্য আড়তে সুজানগরের শুঁটকি মাছ বিক্রি করা হবে। তবে এ বছর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশের সকল আড়তে শুঁটকি মাছের বাজার তেমন ভালনা। সুজানগর পৌর বাজারের একাধিক মৎস্যজীবী ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলেন মাছ কেনা এবং শ্রমিকসহ এক মণ পুঁটি মাছ শুকাতে খরচ হয় সাড়ে ৪হাজার থেকে সাড়ে ৫হাজার টাকা। অথচ বর্তমান বাজারে ১মণ পুঁটি মাছ শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫হাজার থেকে ৬হাজার টাকা যা, প্রায় উৎপাদন খরচের সমান। মৎস্যজীবী এবং মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলেন বাজারের চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি মাছ উৎপাদনে সরকারি ঋণ সহায়তার প্রয়োজন। আর প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা পেলে এখান থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ শুঁটকি মাছ উৎপাদন এবং বাজারজাত করা সম্ভব। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নূর কাজমীর জামান খান বলেন শুঁটকি মাছ উৎপাদনকারী মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা যাতে সরকারি ঋণ সহায়তা পান সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।