ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শিকারিকান্দা এলাকায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বাকি দু’জনের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ। পুলিশ জানায়, নিহত চালকের নাম সাদ্দাম হোসেন (৬০)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সিডস্টোর গ্রামে। অপর নিহতের নাম মো. রকিব (৩২)। রকিবের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা গ্রামে। তিনি বাসচালকের সহকারি (হেলপার) ছিলেন। শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শেরপুরগামী ফায়াজ ট্রাভেলসের একটি যাত্রীবাহী বাস ময়মনসিংহ শহরের দিকে আসছিল। শিকারিকান্দা এলাকায় এলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী একটি পিকআপকে ধাক্কা দেয় এবং পরে সড়ক বিভাজকে বিলবোর্ডের পিলারে গিয়ে পড়ে। এতে বিলবোর্ডটি পড়ে ভেঙে যায়। বাসের সামনের অংশও দুমড়েমুচড়ে যায়। আহত বাস যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কবলে পড়া ফায়াজ পরিবহনের বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। এ সময় তাকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তা কর্ণপাত না করায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে ফিরে এসে এ তথ্য জানান তিনি। এ সময় দুর্ঘটনার পর ফেলে যাওয়া ব্যাগ খুঁজতে বাসটির কাছে আসেন তিনি। আহত শফিকুল ইসলামের বাড়ি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ভালুকা গ্রামে। তিনি গাজীপুরের সালনা এলাকায় বসবাস করে এমব্রয়ডারির কাজ করেন। গত সোমবার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে রাত পৌনে ১১টার দিকে শেরপুরগামী ফাইয়াজ অ্যান্ড তাজ নামের বাসে ওঠেন। শফিকুল জানান, গাজীপুর পার হওয়ার পর থেকেই বাসটি অতিরিক্ত গতিতে উল্টাপাল্টা চালাচ্ছিলেন চালক। এতে বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনা ঘটার মতো অবস্থা হয়েছিল। এ কারণে যাত্রীরা বারবার চালককে আস্তে চালানোর জন্য বলছিলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে বেপরোয়া গতিতেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক। আর এ কারণেই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শেরপুরগামী ফাইয়াজ অ্যান্ড তাজ নামের যাত্রীবাহী একটি বাস শিকারীকান্দা এলাকায় ওভারটেক করতে গিয়ে একটি পিকআপভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপভ্যানটি ছিটকে গিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে। এ সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ডিভাইডারে উঠে সেখানে থাকা বিলবোর্ডের পিলারে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বিলবোর্ডটি ভেঙে পড়ে এবং বাসটির সামনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেলে আরও একজনের মৃত্যু হয়।