বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার এক সাংবাদিক নিজ বাড়ি গাছের বাগানে দেশী মোড়গ-মুরগী চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এখন তার প্রতি মাসে আয় এক লক্ষ টাকার উপরে। তার এই মোড়গ-মুরগীর ফার্মে সাফল্য দেখতে অনেক বেকার যুবক উৎসাহি হয়ে তাদের বেকরত্ত দুরকরতে মোড়গ-মুরগীর ফার্ম তৈরি করছে।
স্থানীয় ভাবে জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাড়পাইকা গ্রামের শশধর চন্দ্র বাড়ৈর ছেলে সমীরন বাড়ৈ এবং তার ভাইয়ে ছেলে সাংবাদিক সৈকত বড়ৈ দু’জনেমিলে নিজ বাড়ি গাছের বাগানে দেশী মোড়গ-মুরগীর খামার তৈরি করে মোড়গ-মুরগীর চাষ করে তারা এখন স্বাবলম্বী হয়েছে।
সমীরন বাড়ৈ বলেন, আমি দির্ঘদিন প্রাইভেট একটি ওষুধ কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করতাম। পরের অধীনে কাজ করতে আমার ভালো না লাগছিলো না। আমি চাকুরী ছেড়ে গ্রামে এসে আমি ও আমার ভাইয়ের ছেলে সাংবাদিক তাকে সাথেনিয়ে ৪বছর পূর্বে ১৫ শতাংশ বাগানের জায়গার ১০ হাজার টাকা খরচ করে তিনটি ছোট ঘর এবং চারদিকে নেট দিয়ে বেড়া দিয়ে ৩০ টাকা দরে ১০০ পিচ দেশি মোড়গ-মুরগীর বাচ্চা কিনে লালন-পালন করা শুরুকরি। সেই একশত পিচ দেশি মোড়গ-মুরগী থেকে বর্তমানে ফার্মে দের হাজার এর অধিক মুরগী রয়েছে। মাঝে মাঝে অনেক মুরগী বিক্রী করা হয়েছে। বর্তমানে খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধীক ডিম পেয়ে থাকি। আমার নিজের তৈরি ইনকিউবেটর মেশিন দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে প্রতিটি বাচ্চা ৪৫ টাকা, প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকা ও প্রতিকেজি মাংস ৫শত টাকা বিক্রি করি। খামারে দেশী মোড়গ-মুরগীর রোগবালাই রোধে কচুরীপানা, এলোভেরা, শুকটি মাছের গুড়া, ধান, গমসহ বাগানে বিভিন্ন প্রজাতের ঘাস মুরগীকে দেশীয় খাবার দেওয়া হয়।আমার সাথে ভাইয়ের ছেলে সাংবাদিক সৈকত বাড়ৈ রয়েছে। এ ছাড়া একজন কর্মচারী মাসিক বেতনে কাজ করছেন। মোড়গ-মুরগীর খামারে মুরগীগুলো ছোট মাঝারি ও বড়সহ চার স্থরে ভাগ করে রাখা হয়। রাতে অতিরিক্ত শৈত্য প্রবাহের সময় মোড়গ-মুরগীর ফার্মে তাপ দেওয়ার জন্য ইলেট্রিক ভাল্ব জ্বালিয়ে রাখা হয়। এ ব্যাপারে সাংবাদিক সৈকত বাড়ৈ বলেন, আমি সাংবাদিকতার পাসাপাসি আমার কাকার সাথে দেশী মোড়গ-মুরগীর খামারের উদ্যোগ নেই। প্রথমে তিনটি ছোট ঘর এবং নেটজালের বেড়া দিয়ে ছোট পরিশরে দেশি মোড়গ-মুরগীর বাচ্চা কিনে পালন শুরু করি। এখন আমাদের দের হাজারে বেশি মোড়গ-মুরগী রয়েছে। সাংবাদিকতার পাসাপাসি মুরগীর খামার করে ভালো লাভবান হচ্ছি। আমাদের দেখাদেখি অনেকে দেশি মুরগী পালতে অগ্রহপ্রকাশ করছে। দেশীয় মোড়গ-মুরগীতে রোগবালাই সহ ঝুঁকি কম।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাক্তার মো. রাফিউল আলম বলেন, অরগানীক ভাবে উৎপাদন হচ্ছে মোড়গ-মুরগী। এই মায়স ও ডিম অনেক সুসাদু এবং মানবদেহে জন্য উপকারি। দেশে বেকার যুবকেরা সমীরন বাড়ৈর মতো উদ্যোক্তা হলে দেশে মাংস ও ডিমের চাহিদা পুরন হতো এবং বেকারতো দূরহতো।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুধু মাত্র চাকুরীর উপর নির্ভরশীল না হয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে আত্মনির্ভরশীল হওয়া যায় সেটা বেশি ভাল হয়। পরিবার, সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতি ভাল ভূমিকা রাখতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে সাংবাদিক সৈকত বাড়ৈ ও সমীর বাড়ৈ।