ফেনী শহরের মাদ্রাসায় পড়তে দেওয়া তিন মাস পূর্বে নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেয়ে স্বজনেরা যেন আকাশের চাঁদ ফিরে পাওয়ার মত অবস্থা। মা ও স্বজনের খুশিতে আত্মাহারা।
মোঃ মাহমুদুল হাসান (১৭)। পিতা প্রবাসী আবদুল মান্নান। মাতা হোসনা বেগম। গ্রাম রামচন্দ্রপুর, উপজেলা চৌদ্দগ্রাম। প্রবাসী পিতা ও গৃহীনি মাতা তাকে (হাসান) ফেনীর একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করে দেন। সে কাপিলা কিতাপ বিভাগের শিক্ষার্থী। বোন জান্নাতুল ফেরদৌস শ্রীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। আর ছোট সন্তান আলিফ মাহমুদ( ৫)। পরিবারের তিন ভাই বোনের মধ্যে হাসান সবার বড় সন্তান। গত ৯ আগস্ট সে মাদ্রাসার শিক্ষক ও পিতা মাতা ও আত্মীয় স্বজনকে না বলে মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তারা আত্মীয় স্বজনের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করে ও তার সন্ধান পায় নি। সন্তান নিখোঁজের ঘটনায় তার মা হোসনা বেগম বাদী হয়ে ফেনী থানায় গত ১৩ আগস্ট একটি ডায়েরি করেন। ডায়েরি নং১০৫৭। এদিকে আদরের নাতি নিখোঁজের চিন্তায় তার দাদী জাহারা বেগম হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্যারালাইসিস রোগ আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাছাড়া ছেলে নিখোঁজের চিন্তায় প্রবাসী পিতা ও গৃহীনী মা পাগল প্রায়। বিগত তিন মাসে ও নিখোঁজ সন্তানের কোন খোঁজ না পেয়ে সন্তান ফিরে পাওয়ার আশা তারা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন। গত কয়দিন পূর্ব তাদের এক নিকট আত্মীয় যিনি হাটহাজারীতে সরকারি চাকুরীর সূত্রে পোস্টিং হয়ে আসলে নিখোঁজ সেই মোঃ মাহমুদুল হাসানকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে ফোনে খবর দেন। হাসান পৌরসভার জেলা পরিষদ মার্কেটে অবস্হিত যুব উন্নয়ন কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্রে প্রশিক্ষন গ্রহন করছেন। আজ শুক্রবার তার কম্পিউটার প্রশিক্ষন পরীক্ষা। প্রশিক্ষন কেন্দ্রের কর্ণধার জমিম উদ্দিন সিকদারের সাথে তার মা ও স্বজনেরা যোগাযোগ করেন। সেই সূত্রে তার মা হোসনা বেগম ও স্বজনেরা গতকাল তার পরীক্ষা কেন্দ্র হাটহাজারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে উপস্থিত হন। পরীক্ষা শেষে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন কেন্দ্রের কর্ণধার জসিম উদ্দিন সিকদার হাসানকে তার মা ও স্বজনদের হাতে তুলে দেন। নিখোঁজ হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে মা ও স্বজনেরা যেন আকাশের চাঁদ ফিরে পেয়েছে। তারা মহাখুশি হয়ে সন্তানকে নিয়ে গতকালই বাড়িতে ফিরে গেছে। তার প্রবাসী পিতাকে সন্তান ফিরে পাওয়া কথা জানালে তিনি ও মহাখুশি।