চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নের অধিবাসী বর্গা চাষি মোঃ মহিউদ্দিন। তিনি সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য ঋণ করে এক কানি জমিতে বাংলা লাউ এর চাষাবাদ করেছিল চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের নেহালপুর নামক স্হানে। ঋনের প্রায় ৩ লাখ টাকা লাউ ক্ষেতের জমিতে ফসল বুনন, সার বীজ ও ক্ষেতের পরিচর্যার জন্য ব্যয় করেন। লাউ এর লতা বৃদ্ধির জন্য জমিতে বাঁশের খুটি রশী দিয়ে মাচাং ও তৈরি করে দিয়েছেন। ক্ষেতে ইতোমধ্যে ফলন শুরু হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ক্ষেতে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করার কথা। উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে ঋনের টাকা পরিশোধ, ঘর মেরামত ও সংসার খরচ পরিচালনার প্রত্যাশা ছিল তার। উপজেলা কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় তিনি লাভ জনক এই বাংলা লাউের ক্ষেত করেন। কিন্তু তার সেই প্রত্যাশার স্বপ্ন একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। গত শুক্রবার ও এই কৃষক ক্ষেতে গিয়ে দেখে এসেছে কবে তার উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবে। এই ক্ষেতে তার ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয়ের আনুমানিক পরিমান নিধারন করেন তিন লাখ টাকার মত। কিন্তু গত শুক্রবার দিবাগত রাতের কোন একসময় দৃবৃত্তরা তার লাউ ক্ষেতের উপর অমানবিক নৃশংসতা চালিয়ে ক্ষেতের সমস্ত লতা কেটে দিয়ে জমির সমস্ত ফসল নস্ট করে দেয়। বর্গা কৃষক মহিউদ্দিনের সাথে নস্টকরা ফসলের মাঠে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা হয়। এই সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন তার ভবিষ্যতের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বর্গা জমিতে চাষাবাদ করতে গিয়ে ঋণ করে যে পুঁজি তিনি ব্যয় করেছেন সংসার খরচের কথা বাদ দিলে ও সেই ঋণ কিভাবে শোধ করবেন সেই চিন্তায় তিনি অস্থির। লাউ ক্ষেতের এই নৃশংসতার কথা প্রচারিত হওয়ার পর থেকে অসংখ্য নারী পূরুষ সেই ক্ষতিগ্রস্হ ক্ষেত দেখতে জমিতে ছুটে যায়। শুধু বর্গা চাষি মহিউদ্দিন নয়, তার পাশাপাশি বাদশা মিয়া আধা কানি, মোঃ ইকবালের আধা কানি, মোঃ শাহেদের আধা কানি, মোজাহের এর আধা কানি জমিতে লাগানো বাংলা লাউয়ের ক্ষেত এবং আজিজুল হক নামে এক ব্যাক্তির পেপে বাগান ও নস্ট করে দিয়েছে দৃবৃত্তরা। গনমাধ্যম কর্মীরা নস্ট করা ফসলী জমির মাঠে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলার সময় তারা জানান, তাদের সাথে কারো বৈরীতা নেই। কেন এই নৃশংস তারা কেউ বুঝে উঠতে পারছেনা। দৃবৃত্তরা প্রায় তিন কানি জমির ফসল নস্ট করে দিয়েছে। নস্টকৃত লাউ (ফসল) বাজারে বিক্রি করতে পারলে এইসব কৃষকদের আয় হত প্রায় আট লক্ষ টাকা। ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ বাজারে বিক্রি করতে পারলে ভোক্তারা ও উপকৃত হত। অমানবিক এই নৃশংসতায় কৃষকদের স্বপ্ন মূহুর্তেই গুড়ে বালিতে পরিনত হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে এই এলাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকতা মীরা বৈষ্ণব ঘটনাস্হল পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ আল মামুন সিকদার বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্হল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি অমানবিক বলে তিনি উল্লেখ করেন। কেউ যদি শক্রতার জের ধরে এই কাজ করেন তাহলে সেটা মোটেই ভালো করেনি। বিষয়টি আইন শৃঙ্খলার সাথে জড়িত। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা দরকার। এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা না গেলে দৃবৃত্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্হ কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পুরাপরি করতে না পারলে ও যতটুকু কৃষি বিভাগের পক্ষে সম্ভব করা হবে বলে তিনি জানান।