কলকাতায় আগামী বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দারুন ছন্দে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। গত শনিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে মিচেল মার্শের ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১৭৭ রানের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটের জয় দিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে। এই জয়ের মাধ্যমে ৯ ম্যাচে টানা সাত জয়সহ শেষ চারের টিকেট পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের পথে তারা গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচে পরাজিত হয়েছে। কলকাতার সেমিফাইনালের ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ১৯৯৯ আসরের নাটকীয় সেমিফাইনালে পুনরাবৃত্তি। সেবারের ম্যাচটি টাই হবার পর গ্রুপ পর্বে এগিয়ে থাকার সুবাদে অস্ট্রেলিয়াকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। গত শনিবার বাংলাদেশের দেয়া ৩০৭ রানের জয়ের লক্ষ্য ৩২ বল হাতে রেখে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২১ রান করা মার্শ এনিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। পাশাপাশি ৮৭ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে গত শনিবার তিন সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নারের (৫৩) সাথে ১১৬ বলে ১২০ রান যোগ করেছেন মার্শ। এরপর তৃতীয় উইকেটে স্টিভ স্মিথের (৬৩*) সালে ১৩৫ বলে অপরাজিত ১৭৫ রানের জুটি গড়েন মার্শ। ১৩২ বলে ১৭টি বাউন্ডারি ও ৯টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকানো ৩২ বছর বয়সী মার্শ বলেছেন, ‘সেঞ্চুরি করা সবসময়ই বিশেষ কিছু। কিন্তু সত্যি বলতে কি এতটা আশা করিনি। একটা সময় পেশীর টান অনুভব করছিলাম। সে কারণে নিজেকে স্থির রাখার চেষ্টা করেছি। খুব বেশী শক্তি ব্যয় করার দিকে মনোযোগী হইনি।’ বল হাতে অবশ্য এই পেসার গত শনিবার ছিলেন সবচেয়ে ব্যয়বহুল। চার ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশুন্য। এ সম্পর্কে মার্শ বলেছেন, ‘বোলিংয়ে আমি মোটেই ভাল করতে পারিনি, সে কারনেই ব্যাট হাতে কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। বিশ্বের সব ক্রিকেট দলই নিজেদের উন্নতির প্রমান দিচ্ছে। সেজন্য বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা মোটেই সহজ কাজ নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা করতে পেরে আমরা দারুন উত্তেজিত।’ এবারের আসরে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ দলগুলো বেশ কয়েক বার ৩০০রও বেশী রান করেছে। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৪ রানের পরাজয় ছিল সর্বোচ্চ রানের পরাজয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮৮ রান করেও পাঁচ রানে জিততে হয়েছে অসিদের। এরপর গত মঙ্গলবার আফগানিস্তান ৫ উইকেটে ২৯১ রান সংগ্রহ করেছিল। ঐ ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের যাদুকরী ইনিংসে শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোন অঘটন হয়নি। মাত্র ৯১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পরও ম্যাক্সওয়েলের ২০১ রানের অপরাজিত ইনিংসে অবিশ্বাস্য ভাবে রক্ষা পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে মার্শ স্বীকার করেছেন নতুন বলে অস্ট্রেলিয়ার উইকেট না পাবার বিষয়টি প্রকিপক্ষকে বড় রান গড়তে সহায়তা করেছে। এ সম্পর্কে মার্শ বলেন, ‘এখানে ব্যাখ্যা দেবার বেশ কিছু বিষয় আছে। কিছু উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিল, কিছু মাঠও আয়তনে ছোট। এসব মাঠে আমাদের খেলার খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই। বিশ্বকাপে খেলতে আসা সব দলই ভাল, বেশ কয়েকটি দল বড় রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। সে কারনেই আমি মনে করি উইকেট তুলে নেবার বিষয়টি সবসময় মাথায় রাখতে হবে। সবসময় পরিকল্পনা অনুাযায়ী সবকিছু হয়না, কিন্তু তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’