বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে প্রবেশ করে সাধারণ ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা বরিশাল-ভোলা আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রায় এক ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে। হামলায় আহত ১০ জনের মধ্যে গুরুত্বর আহত শিক্ষার্থী সিফাত হাসান, আশিকুজ্জামান সজীব ও আতিক শাহরিয়াকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রীর মিছিলে না যাওয়ায় তাদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। তবে যাদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের দাবি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে হামলার চেষ্টাকালে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। তবে কলেজ প্রশাসনের দাবি রাতের বেলায় দুর্বৃত্তরা তাদের ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ খলিল উদ্দিন জানিয়েছেন, মধ্যরাতে হলে প্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। তবে ঘটনার সময় তিনি সেখানে না থাকায় কারা হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আতিক শাহরিয়ার বলেন, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভোকেশনাল ও পলিটেকনিকের কোটা বাতিলের দাবিতে গত বুধবার থেকে তারা আন্দোলন করছেন। সোমবার কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধণ করতে এসেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম। তার আগমন উপলক্ষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত রেখে মিছিলে অংশ নিতে বলেন কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ভূঁইয়া। কিন্তু মিছিলে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষিপ্ত হন। এনিয়ে সন্ধ্যায় তাদের সাথে বাগবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে রাতে সাকিব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে কলেজের ১০/১২ শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত ২০/২৫ জন সন্ত্রাসীরা রামদা, স্টাম্প, লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রাবাসে হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১০ জন ছাত্র আহত হয়েছে।
কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ভূঁইয়া বলেন, কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল হতে দিতে চায়নি বিএনপি ও জামায়াতের একটি পক্ষ। তাদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে ম্যুরাল ভাঙার চেষ্টা করা হয়। তখন প্রতিরোধ করলে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি আবদুর রহমান মুকুল জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে কলেজে দুটি গ্রুপ রয়েছে। তারা এক গ্রুপ হলে এসে অপর গ্রুপের ওপর হামলা করেছে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।