বর্তমানে ছিনতাই-রাহাজানি নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে রাতের ঢাকায় বেপরোয়া হয়ে পড়েছে ছিনতাইকারীরা। অনেকেই ছিনতাইকারীদের শিকার হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। কেউ বাধা দিতে গেলে আহত-নিহত হচ্ছেন। তাদের অপকর্মের কারণে মানুষ আজ অতিষ্ঠ। মানুষের কষ্ট হয় এমন কর্ম করতে তারা দ্বিধাবোধ করে না। বরং তা নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে ছিনতাই, ডাকাতি। ছিনতাইকারীরা মানুষের চলার পথে হুমকিস্বরূপ। প্রত্যেক মানুষের নিরাপদে চলাফেরা করার অধিকার রয়েছে। মানুষের এই নিরাপত্তা ছিনতাইকারীদের কারণে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। প্রতিটি স্থানেই একটা অতঙ্ক নিয়ে মানুষকে চলাফেরা করতে হয়। কখন জানি কোন অঘটন ঘটে যায়! হাঁটতে গেলে, গাড়িতে চলতে গেলে পকেটের মানিব্যাগ থাকবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। নেই জীবনের নিরাপত্তা। সামান্য টাকার জন্য নেককে জীবন পর্যন্ত দিতে হয় কিছু অসভ্য-বর্বর ছিনতাইকারীর হাতে। এ থেকেই অনুমান করা যায়, ছিনতাইকারীরা কত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছিনতাইয়ের মুহূর্তে ছিনতাইয়ের শিকার মানুষটি পুলিশের সাহায্য পায় না। ছিনতাইয়ের পরও পুলিশের তেমন কিছু করার থাকে না। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলা হয় না। তাহলে ছিনতাইকারীদের বিপজ্জনক উপদ্রব থেকে জনসাধারণ কীভাবে রক্ষা পেতে পারে? পুলিশ কর্তৃপক্ষের আন্তরিক তৎপরতার দ্বারা। ফলে পুলিশের টহল বাড়ানোর মাধ্যমে পুলিশি সক্রিয়তার দৃশ্যমানতা বাড়ানো দরকার। ঘন ঘন গ্রেপ্তার অভিযান চালানো এবং গ্রেপ্তার লোকদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া দরকার। তাই ছিনতাইকারীদের মূল হোতাদের আগে ধরতে হবে। যাদের হাত ধরে সমাজে এই অপকর্মের সূচনা হচ্ছে, যাদের নির্দেশে চলছে এমন অপকর্ম, তাদের এমন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যেন অন্যরা তা দেখে এই পথ ছাড়তে বাধ্য হয়। আইনের সঠিক প্রয়োগ ছাড়া সমাজ থেকে অপকর্ম দূর করা সম্ভব নয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো মা তার সন্তানকে হারাতে থাকবে। সর্বস্ব হারাবে পথের পথিক। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকবে না। তাই ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি আমাদের সবাইকেই এ বিষয়ে সর্বাবস্থায় সচেতন থাকতে হবে। আমাদের একটু সচেতনতাই নিরাপত্তার বাহন হিসেবে কাজ করবে। রাজধানীকে ছিনতাইকারীমুক্ত না করা পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ অভিযান চালাতে হবে। কেননা উঠেছে যে, মানুষ খুন করতেও কুন্ঠাবোধ করছে না। রাজধানীতে কয়েকটি মর্মান্তিক নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ছিনতাইকারী চক্রের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। ছিনতাইয়ের ঘটনা যত বাড়ছে, অপরাধ দমনে পুলিশ বাহিনীর ব্যর্থতার চিত্র ততই স্পষ্ট হচ্ছে।ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে পুলিশের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা এই অপরাধের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। পাশাপাশি সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে।